মাটির গন্ধে গড়া… গ্রামের মাঠে বেড়ে ওঠা। সেই মাঠেই ছিল ছুটে চলা, ঘাম ঝরানো, স্বপ্ন বুনে চলা। আর সেই স্বপ্ন এবার ছুঁয়ে ফেললো আকাশ। সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১০ ক্ষুদে ফুটবলার এখন ব্যাংককের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয় সাবিনা খাতুনের গড়া ‘ওয়ারিয়র স্পোর্টস একাডেমির’ প্রতিনিধি দল। তারা অংশ নিচ্ছে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-১৪ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে। মূল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (১০ আগস্ট) এক্কামাই ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মাঠে।

এছাড়া সফরে রয়েছে আরও কয়েকটি প্রীতি ম্যাচ, যা আয়োজন করছে আই এফ এল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট।

জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এখন ভুটানের পারো এফসিতে খেলছেন। সেখান থেকেই ফোনে জানান,“আমার স্বপ্ন ছিল শুধু নিজে খেলার নয়, আরও অনেক শিশুর হাত ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে তুলে ধরার। আজ আমার একাডেমির ক্ষুদে ফুটবলাররা বিদেশ যাচ্ছে—এটা আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত।”

তিনি আরও বলেন“এই একাডেমি শুধু ফুটবল শেখানোর জায়গা নয়, এটা আত্মবিশ্বাস গড়ার জায়গা। আমি চাই, তারা মাঠে শুধু গোল করার জন্য না, দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য খেলুক।”

ওয়ারিয়র স্পোর্টস একাডেমির এই আন্তর্জাতিক সফরের পেছনে দীর্ঘ প্রস্তুতি রয়েছে। একাডেমির হেড কোচ পিন্টু কুমার মিত্র, সহকারী কোচ সিরাজ উদ্দিন, ট্রেইনার ফেরদৌস খোকন, ম্যানেজার মেহেদী হাসান ও টিম লিডার তৌসিফ ইসলাম সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করেছেন দল গঠনে।

খেলোয়াড় নির্বাচন, অনুশীলন, ভিসা প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং স্পন্সর সংগ্রহ—সব জায়গাতেই সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন সাবিনা খাতুন।

সফরকারী খেলোয়াড়রা হলেন—আলিফ জামান, সোহাগ হোসেন, সিয়াম ইসলাম, মারুফ বিল্লাহ, আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, মুকিদুরজ্জামান, প্রিয়ম বিশ্বাস, রিফাত পারভেজ, নুর হোসেন ও সালাহউদ্দিন রনি।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে ‘ওয়ারিয়র স্পোর্টস একাডেমি’। অল্প সময়েই নিয়মিত প্রশিক্ষণ, বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও প্রতিভা বাছাইয়ের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এই দল। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের স্বীকৃত ‘ওয়ান স্টার’ একাডেমি।

এই আন্তর্জাতিক সফরের স্পন্সর হিসেবে রয়েছে—বাংলা ট্র্যাক সল্যুশন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং রয়্যাল ওরাঞ্জে।

ইব্রাহিম খলিল/এমটিআই