মেলার আড়ালে জুয়া ও লটারি বিক্রি, নেই প্রশাসনের তদারকি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে কুটির ও পণ্য মেলার নামে প্রবেশ টিকিটের আড়ালে চলছে র্যাফেল ড্র। মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টেলিভিশন, বাইসাইকেলসহ আকর্ষণীয় পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার টিকিট। প্রশাসনের কোনো অনুমোদন না থাকলেও এসব কার্যক্রম বন্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, আর ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের বিমানবন্দর সড়কের পাশে ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন এলাকায় বসেছে এই মেলা। দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে হচ্ছে ২০ টাকার টিকিট কেটে। সেই টিকিটে দেওয়া হচ্ছে র্যাফেল নম্বর। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার টিকিট।
বিজ্ঞাপন
সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ইজিবাইকে করে বিক্রি হচ্ছে এসব র্যাফেল টিকিট। অন্তত ৫০টি ব্যাটারিচালিত যানবাহনে এই ভ্রাম্যমাণ বিক্রি চলছে বলে জানান স্থানীয়রা। অনেকে একাধিক টিকিট কিনছেন পুরস্কারের আশায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রবেশ টিকিটের নামে এখানে চলছে প্রকাশ্য লটারি। পুরস্কারের নাম দিয়ে টাকা নেওয়া হলেও সেগুলোর প্রাপ্তি নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। তাদের দাবি, প্রবেশ টিকিটের নামে চালানো এই অবৈধ লটারি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হোক। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জনমনে আরও ক্ষোভ ও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী এলাকার দিনমজুর আবদুল খালেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোটরসাইকেল জেতার আশায় ২০০ টাকার টিকিট কিনেছিলাম। কিছুই পাইনি। এটা প্রতারণা ছাড়া কিছু না।
স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেলার নামে এখানে জুয়া চলছে। টিকিট বিক্রি করে মানুষকে ঠকানো হচ্ছে। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মেলা এলাকায় উচ্চ শব্দে ডিজে পার্টি চলে। সৃষ্টি হয় যানজট। এতে পড়ালেখা ও জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে।
সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শিউলি বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শহরটি শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু মেলার এই লটারি ও শব্দদূষণে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ছে।
ঢাকা থেকে ফেরা যাত্রী শাওন রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফ্লাইট থেকে নামার পর শহরে ঢুকতেই দেড় ঘণ্টা লেগে গেছে। মেলা ও যানজট মিলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে আয়োজক ‘এবিসি কুটির ও শিল্প মেলা কমিটি’র সভাপতির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরই আলম সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিল্প ও কুটির মেলার অনুমোদন রয়েছে। তবে লটারি বা জুয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরিফুল ইসলাম/আরকে