চুয়াডাঙ্গায় করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলায় সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।  গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে রেকর্ড সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

জেলায় একদিনে ৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা দ্বিতীয় ঢেউয়ে সর্বোচ্চ। এ সময় করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের ও জেলার বাইরে ৭ জনের। এর আগে গত ৩ জুন ১৮৮ নমুনা পরীক্ষায় ৫১ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছিল।

রোববার (১৩ জুন) চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট ১৩২টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে। এর মধ্যে শনাক্ত হয় ৫৭ জনের। নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৩৫ জনই দামুড়হুদা উপজেলার বাসিন্দা। অন্যদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১৩ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২ জন ও জীবননগর উপজেলার ৭ জন।

এদিন নতুন আরও ১২১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১১ হাজার ৭৫ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১০ হাজার ৬৬৩ জনের। 

বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৩২২ জন। এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৭৮ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২৪ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১৬৫ জন ও জীবনগর উপজেলার ৫৫ জন রয়েছেন।
 
সদর উপজেলার ৭৮ জনের মধ্যে ১২ জন হাসপাতালে, বাড়িতে ৬৫ জন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন বাড়িতে, ৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১ জনকে রেফার্ড করা হয়েছে। 
 দামুড়হুদা উপজেলার ১৬৫ জনের মধ্যে বাড়িতে ১৪৪ জন ও হাসপাতালে ২০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। রেফার্ড করা হয়েছে ১ জনকে। জীবননগর উপজেলার ৫৫ জনের মধ্যে একজন হাসপাতালে ও ৫৪ জন বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, রোববার জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স ও পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। অক্সিজেনেরও কোনো সংকট নেই। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, চুয়াডাঙ্গায় করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। বিশেষ করে দামুড়হুদা উপজেলায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। দরকার হলে পুরো দামুড়হুদা উপজেলা লকডাউন দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে সোমবার করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, দামুড়হুদার ডুগডুগি ও নাটুদহ পশুহাটগুলো বন্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে সংক্রমণ বেশি হওয়ায় এসব গ্রামের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

আফজালুল হক/ওএফ