১০০ এতিমকে খাওয়ানোসহ তিন শর্তে ‘হাওরের সুলতান-৪’র সঙ্গে পর্যটকের সমঝোতা
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণে গিয়ে প্রতিশ্রুত সেবা না পাওয়ায় ‘হাওরের সুলতান-৪’ বোট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন মাহাবুর আলম সোহাগ নামে এক পর্যটক। সরাসরি আলোচনার পর ১০০ এতিমকে খাওয়ানোসহ তিনটি শর্তে সমঝোতায় পৌঁছেছেন সেই পর্যটক ও বোট কর্তৃপক্ষ।
গত ২২ জুলাই ঢাকার ওই পর্যটক নিজ পরিবারসহ মোট তিনটি পরিবার নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে যান। এর ১৫ দিন আগে একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ‘হাওরের সুলতান-৪’ বোট বুকিং করেছিলেন তিনি। বুকিংয়ের সময় বোট কর্তৃপক্ষ যে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা তারা রক্ষা করেনি বলে অভিযোগ করেন ওই পর্যটক।
বিজ্ঞাপন
মাহাবুর আলম সোহাগ দাবি করেন, তাকে আগে জানানো হয়েছিল সুনামগঞ্জে গাড়ি থেকে নেমে শাহেববাড়ি ঘাট থেকে বোট ছাড়বে। কিন্তু পরে আনোয়ারপুর এলাকা থেকে বোট ছাড়ে, যা সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে। এ তথ্য তাকে জানানো হয় যাত্রার আগের দিন রাতে। এছাড়া বুকিংয়ের পর বারবার জানতে চাওয়ার পরও তার জন্য বরাদ্দ রুমের তথ্য দেওয়া হয়নি। তিনি এক রুমে তিনজন থাকার জন্য পেমেন্ট করলেও দেওয়া হয় এক বেডের রুম, যা ছিল বিব্রতকর।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
আলোচনায় মাহাবুর আলম সোহাগ তিনটি শর্ত দেন— দেশের যেকোনো জেলার এতিমখানায় ১০০ জন এতিমকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়াতে হবে। যেকোনো মাধ্যমে বোট বুকিং দিলে দ্রুততার সঙ্গে ভোক্তাকে সব তথ্য জানাতে হবে। বোটের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেনের ভাউচার দিতে হবে।
‘হাওরের সুলতান-৪’ কর্তৃপক্ষ সব শর্ত মেনে নেয় এবং আগামী এক মাসের মধ্যে সুনামগঞ্জের একটি এতিমখানায় ১০০ জন এতিমকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। শর্ত পূরণের আশ্বাস পাওয়ার পর পর্যটক মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।
হাওরের সুলতান-৪ এর পরিচালক আসিফ আহনাফ বলেন, আমাদের অতিথি যে এজেন্সির মাধ্যমে নৌকা বুক করেছিলেন, তারা পর্যটককে সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অতিথির অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর না ঘটে। ভবিষ্যতে যেন কোনো পর্যটক এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি না হন, সেই চেষ্টা করব। ভ্রমণসেবায় স্বচ্ছতা ও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমরা আরও কঠোর হব। ভোক্তার দেওয়া তিনটি শর্ত আমরা আন্তরিকভাবে মেনে নিয়েছি এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত কার্যকর করব।
তামিম রায়হান/আরকে