শেষ স্নান করে চন্দন-তিলকে সেজে যতীন সরকারের চিরবিদায়
শেষবারের মতো স্নান সেরে চন্দন ও তিলকে সেজে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক যতীন সরকার।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ২টায় নেত্রকোণা মহাশ্মশানে শুরু হয় তার শেষকৃত্য।
বিজ্ঞাপন
রাত একটা দিকে ‘বানপ্রস্থ’ নামে তাঁর বাসভবন থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মহাশ্মশানঘাটে। মুখাগ্নি করেন একমাত্র ছেলে সুমন সরকার। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেয়ে সুদিপ্তা সরকার—শূন্য চোখে বাবার নিথর দেহের দিকে তাকিয়ে। চারপাশে ছিলেন আত্মীয়–স্বজন, সহকর্মী ও ঢাকা থেকে আসা উদীচি শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা। সবার চোখেই ছিল প্রিয়জন হারানোর বেদনা।
পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ হতে ভোর পাঁচটা বেজে যাবে। আগামী ২৫ আগস্ট শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হবে। বাবার আত্মার শান্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন সুদিপ্তা সরকার।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বুধবার রাত ৮টায় নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয় তাঁর মরদেহ। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌরসভা, বিশ্ববিদ্যালয়, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয় ও পরে ‘বানপ্রস্থে’। রাত একটা পর্যন্ত সেখানে সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পান।
বুধবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অধ্যাপক যতীন সরকার। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ বহু স্বজন, গুণগ্রাহী ও সহযোদ্ধা রেখে গেছেন তিনি।
সংস্কৃতির ধারাবাহিক সংগ্রামের এক অনির্বাণ যোদ্ধা ছিলেন যতীন সরকার। সাম্যবাদী ও মানবতাবাদী এই লেখক পেয়েছেন স্বাধীনতা পুরস্কার, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র পদকসহ অসংখ্য স্বীকৃতি।
চয়ন দেবনাথ মুন্না/এআইএস