ফুলসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে ২ শিক্ষকের রাজকীয় বিদায়
দীর্ঘ চাকরিজীবন শেষে প্রিয় স্কুল থেকে দুই শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে শহর ঘুরিয়ে ব্যতিক্রমি বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালায়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিদায়কে স্মরণীয় রাখতে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন বলে জানিয়েছে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে দুই শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
আয়োজকরা জানান, সিনিয়র শিক্ষক মোশারফ হোসেন দীর্ঘ ৩০ বছর ৯ মাস ১৬ দিন ও সিনিয়র শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণ সাহা দীর্ঘ ২৯ বছর রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। প্রাণকৃষ্ণ সাহার আজ শেষ কর্মদিবস ছিল এবং মোশারফ হোসেন জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখে অবসর গ্রহণ করেন। তারা দুজনই দীর্ঘ ৩০ বছর স্কুলে শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। তাদের বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় জানানো হয়েছে। এ সময় স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘোড়ার গাড়ির পেছনে পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা পদযাত্রা করে। পরে তাদেরকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। বিদায় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাসিম আহমেদ বলেন, স্যাররা চলে যাচ্ছে এজন্য আমাদের অনেক খারাপ লাগছে। আমরা ভাবতেই পারেনি আমাদের এসএসসি পরীক্ষার আগে স্যারেরা আমাদের থেকে বিদায় নেবেন।
বিজ্ঞাপন
বিদায়ী সিনিয়র শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘ ৩০ বছর ৯ মাস ১৬ দিন বিদ্যালয়ে চাকরি করেছি। সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে বিদায় নিয়েছি। আমার চাকরি জীবনের ৩০ বছরে আমি এই ব্যতিক্রমী বিদায় কখনো দেখিনি। এটা আমার জন্য একটা দারুন প্রাপ্তি বলে মনে করি।
বিদায়ী সিনিয়র শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণ সাহা বলেন, আমি আমার অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। ইতিপূর্বে এই বিদ্যালযয়ে কোনো শিক্ষককে এইভাবে বিদায় দেওয়া হয়নি। আমি খুবই অভিভূত।
রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আজ আমরা দুই রত্নকে হারালাম। চাকরি জীবনের অবসর সবাইকে নিতে হবে। এটা কষ্টের হলেও সবাইকে মেনে নিতে হবে। আর এই বিদায়ের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে তাদের দুইজনকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় জানানো হয়েছে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এএমকে