স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার জুয়ার আসর থেকে আটক ৯ জন কারাগারে
পাবনার আতাইকুলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির পাভেলের শোরুমে জুয়ার আসর থেকে বিএনপি সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের শ্রীকোল বাজারের আরএফএলের শোরুম থেকে আটক করা হয়।
বিজ্ঞাপন
আটককৃতরা হলেন- সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের চোমরপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ও ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুর রউফ (৪৫), শ্রীকোল গ্রামের দিলবার হোসেনের ছেলে খাজা হোসেন (৪০), লোহাগড়া গ্রামের তালেব মোল্লার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৯), ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল কাফির ছেলে জনি (৪০), চোমরপুর গ্রামের জামাল মাস্টারের ছেলে লালন হোসেন (৩৮), জাবেদ আলীর ছেলে হাশেম আলী (৪০), শ্রীকোল গ্রামের আহমেদ মুন্সির ছেলে জলিল মুন্সী (৪২), শ্রীকোল বেলতলা গ্রামের আজিবর ইসলামের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৪০), শ্রীকোল দিয়ারপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন শেখের ছেলে আব্দুল মজিদ (এনজিও) (৪২)।
এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুর রউফ পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান মিন্টুর সঙ্গে বিএনপির রাজনীতি করতেন। এরপর মিন্টু আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তিনি এলাকায় এসে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর দোয়া চেয়ে বিভিন্ন পোগ্রাম ও বিলবোর্ড টানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের শ্রীকোল বাজারের পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির পাভেলের আরএফএলের শোরুমে বিএনপি সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুর রউফসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত লোকজন দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসর বসিয়ে আসছে। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আতাইকুলা থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদেকে আটক করে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েও যায়। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্পটে সারারাত ধরে জুয়ার আসর বসানো হয়ে থাকে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, টাকার বিনিময়ে ওই অফিস জুয়ারুদের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার খেলা। এলাকায় গরু চুরি থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে একটি চক্র। কয়েকটি স্পটে সারারাত ধরে কয়েকমাস ধরে জুয়া খেলা হলেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে না।
তারা আরও বলেন, ৫ আগস্টে হাসিনা সরকারের পতন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ভাগ্নের আশীর্বাদে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পাভেল। সেই সময় সালিশ দরবার ও চাঁদাবাজি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন। এসব নেতা কোনো মামলার শিকার হোননি। এলাকায় পূর্বের মতোই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। জুয়ার ব্যাপক সয়লাব করেছে। পুলিশ এদেরকে গ্রেপ্তার করছে না।
আতাইকুলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম হাবিবুল আওয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক ৯ জনকে শুক্রবার দুপুরে মামলার মাধ্যমে পাবনা কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছি।
রাকিব হাসনাত/আরকে