বকেয়া বেতনের দাবিতে জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিকদের বিক্ষোভ
জয়পুরহাট চিনিকলের বকেয়া বেতন, ইক্ষু উন্নয়ন সহকারীদের (সিডিএ) ইনক্রিমেন্ট ও মহার্ঘ ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। এসব নিরসনে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। একই সাথে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অফিসে ঢুকতে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৯টায় জয়পুরহাট চিনিকলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শ্রমিক ও কর্মচারীরা একটি বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভের পর একটি মিছিল প্রশাসনিক চত্বর হয়ে মিল এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি মিলের মূল গেটের সামনে শেষ হয়। সেখানে তারা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করেন।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভকারী শ্রমিক-কর্মচারীরা জানান, চিনিকলের স্থায়ী শ্রমিকদের চলতি বছরের জুলাই মাসের বেতন এখনও দেওয়া হয়নি। এদিকে আগস্ট মাসের বেতনও পাওয়া যাবে কিনা, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। দেশের আটটি চিনিকলে সিডিএ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলেও জয়পুরহাট চিনিকলের কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়নি। এছাড়া শ্রমিকদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার তালিকায়ও তাদের রাখা হয়নি। এসব দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা সকাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন। কর্মকর্তাদের অফিসে প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য অফিসের তালা খুলতে দেওয়া হয়নি। যার ফলে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অতিথি ভবন থেকে বের হতে পারেননি।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন- জয়পুরহাট চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী আকতার, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ হোসেন, জয়পুরহাট চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আনিছুর রহমান, সিডিএ খায়রুল ইসলাম এবং মেকানিক মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
এ সময় জয়পুরহাট চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী আকতার বলেন, বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে, সকল মিলের সিডিএ ইনক্রিমেন্ট জুলাইয়ে বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আটটি চিনিকলে সিডিএ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলেও আমাদের মিলের কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়নি। সিডিএ ইনক্রিমেন্ট না দিলে কর্মচারীরা কাজে আসবেন না। পাশাপাশি মজুরি কমিশনের মহার্ঘ ভাতায় শ্রমিকদের রাখা হয়নি। আমরা আমাদের শ্রমিকদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ হোসেন বলেন, আমাদের যে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়া হলে আমরা বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন মোল্যা বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তা আমাকে আগে থেকে জানানো হয়নি। তারা আমাকে লিখিত বা মৌখিকভাবে অবহিত করেননি। অফিসের কর্মকর্তারা কোনোভাবেই অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি কারণ পিয়নের কাছ থেকে চাবিগুলো নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি এসপি ও ডিসিকে জানিয়েছি। সমন্বয় করে মিলের উন্নয়নে কাজ করা যেতে পারে।
চম্পক কুমার/এআরবি