জামায়াত নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল
এসপি-ওসির নাকের ডগায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও লুটপাট হচ্ছে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসপি ও ওসির নাকের ডগা দিয়ে সন্ত্রাস, লুটপাট ও চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল মসজিদের অডিটেরিয়ামে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক জনশক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
জামায়াতের এ নেতা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি চাঁপাইনবাবগঞ্জে থানাকে ব্যবহার করে ইউনিয়নগুলোতে এক পক্ষের মামলা, আরেক পক্ষের মামলা এই সমস্ত করে ইউনিয়নের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। যেই মামলাটি হওয়া উচিত সেটির জন্য তদবির লাগে আর যেই মামলাটি হওয়ার প্রয়োজন নাই সেটিই আগে হয়ে যায়। এই ঘটনাগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের থানায় হচ্ছে। আমি পুলিশ প্রশাসনকে খুবই পরিষ্কার করে বলতে চাই, আপনারা পক্ষপাতিত্ব করবেন না।
পুলিশ ও প্রশাসনকে সতর্ক করে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আপনাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। রাণিহাটিতে কারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও প্রতিদিন মানুষের ওপর জুলুম করছে; আবার গরম গরম বক্তৃতা দিচ্ছেন, তাদেরকে আপনারা দেখেন না? তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না কেন? পুলিশ প্রশাসন কী করে? এসপি ও ডিসি সাহেবের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা রাণিহাটিকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বানাতে দিতে চাই না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আর যদি চাঁদাবাজি করা হয়, তাহলে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, আইন যাতে জনগণ হাতে তুলে না নেয়। এ ব্যাপারে আমি আগেই পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এসপি ও ওসির নাকের ডগা দিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও লুটপাট হবে; মাছের ঘের, খাল ও নদী দখল হবে আর আপনারা ভিলেজ পলেটিক্সের নামে এক পক্ষের পদক্ষেপ (মামলা) নেবেন, এগুলো আমরা মেনে নেব না। প্রশাসন কোনো একটি বিশেষ দলের আনুগত্য করার জন্য ভূমিকা পালন করলে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী নয়, দেশবাসীও এটা মেনে নেবে না। ওসি সাহেব, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই আপনি নিরীহ জনগণের পক্ষ নেবেন, আপনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন। যেই মামলা নেওয়া উচিত সেটি নেবেন আর যেটি নেওয়া উচিত নয় সেটি আপনি নেবেন না।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, রাণিহাটি ও ঘোড়াপাখিয়াতে সন্ত্রাস কে করে তা পুলিশ প্রশাসন জানে না? তাহলে তারা (সন্ত্রাসীরা) বাড়িতে থাকে কীভাবে? তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় না কেন? তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না কেন? আপনারা শক্তের ভক্ত আর নরমের জম হয়ে যদি কোনো ভূমিকা পালন করেন তাহলে এটা চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ মেনে নেবে না। আমার কাছে খবর আছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিরীহ জনগণ লাঞ্ছিত হচ্ছে। আমি বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। আপনারা কোনো দলের পক্ষে ভূমিকা রাখবেন না; এটা আমরা মেনে নেব না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ এটা মেনে নেবে না।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা ভিলেজ পলিটিক্স থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে চাই। ভিলেজ পলিটিক্সে রাজনৈতিক দলগুলো উভয় গ্রুপকে লাগিয়ে দিয়ে এখান থেকে ফায়দা হাসিল করতে চায়। এখান থেকে জনগণকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুখলেসুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানী, জামায়াত নেতা কবিরুল ইসলাম কবির ও শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম রবিসহ প্রমুখ।
মো. আশিক আলী/এসএসএইচ