নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে জাল ফেলা নিয়ে দুই নৌকার জেলেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে হামলায় ইব্রাহিম মাঝি (৪০) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। হামলার সময় ইব্রাহিম নৌকার ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। এ সময় বাঁশের লগির আঘাতে তার পেটের বাম পাশে ক্ষত হয়। একপর্যায়ে নৌকাটি নদীতে ডুবে গেলে ইব্রাহিমও ডুবে মারা যান। তবে হামলাকারীদের কারও নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি কেউ।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে মোবাইলফোনে ক্ষতিগ্রস্ত নৌকার মাঝি মো. আল-আমিন ও নিহতের খালাতো ভাই আবুল বাশার আবু হুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহত ইব্রাহিম লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলেকজান্ডার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বালুরচর এলাকার মোহতাসিন মাঝির ছেলে।

আল-আমিন মাঝি জানান, রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে হাতিয়া এলাকার মেঘনা নদীতে তারা জাল ফেলেন। এ সময় অন্য একটি নৌকার মাঝিরাও তাদের পাশাপাশি জাল ফেলেন। তবে দুই নৌকার জাল এলোমেলো হয়ে যায়। বিকেলে আল-আমিন ওই নৌকার কাছে গিয়ে জাল সরিয়ে নিতে বলেন। এতে নৌকার মাঝি তাকে গালমন্দ করেন। এতে দুই পক্ষই উত্তেজিত হয়ে গালমন্দ শুরু করে। পরে তিনি ওই নৌকার কাছ থেকে চলে আসেন। এশার আজানের আগমুহূর্তে হঠাৎ করে ওই নৌকার মাঝি লোকজন নিয়ে আসে আল-আমিনদের নৌকায় হামলা চালান। এ সময় তাদেরকে মারধরও করেন। এর মধ্যে সবাই কোনোভাবে বেঁচে ফেরেন। 

তিনি আরও বলেন, গেল বছর ইব্রাহিম আমাদের মাঝি ছিলেন। এবার তিনি আমাকে নৌকা চালানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। হামলা চালিয়ে আমাদের নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে মারধরও করেছে। ইব্রাহিম নৌকার ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। নৌকা ডুবে যাওয়া তিনিও ডুবে মারা গেছেন। তার পেটের বাম পাশে বাঁশের লগির আঘাত লেগে চামড়া উঠে যায়।

নিহতের খালাতো ভাই আবুল বাশার বলেন, আমার খালাতো ভাইয়ের মরদেহ ভোলার দৌলতখান নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আমরা তার মরদেহ নিয়ে এসেছি। সেখানকার থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে তিনি নৌ-পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে বলেন। পরে মোবাইলফোনে হাতিয়া নৌ-পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা মরদেহ সেখানে নিয়ে যেতে বলেছে। আমরা সেখানে মরদেহ নিইনি। মরদেহ আমরা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

হাতিয়া উপজেলার নলছিড়া নৌ-পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আশীষ চন্দ্র সাহা বলেন, আমাকে দৌলতখান থানার ওসি মোবাইলফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। মামলা করতে হলে হাতিয়া থানায় করতে হবে। এজন্য নিহতের স্বজনদেরকে মরদেহ নিয়ে আসার জন্য বলেছি। কিন্তু তারা আসেননি। তার আমাকে বিস্তারিত কোনো তথ্যও দেননি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর