২৫ বছরের যুবককে শিশু বানিয়ে জামিন, আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ
অভিযুক্ত আইনজীবী।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সরকারের লাখো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন প্রতারক চক্রের মূলহোতা। তবে ২৫ বছর বয়সী ওই যুবককে শিশু দেখিয়ে আদালত থেকে জামিন নেওয়ার ঘটনা ঘটে। পলাশ রানা নামে ওই প্রতারককে ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে জামিন পেতে সহায়তা করেন এক আইনজীবী। ভয়াবহ এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা শিশু আদালতের বিচারক এ নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে পেশকার সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
গত ১৫ জুলাই সেনা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের তালুককানুপুর গ্রাম থেকে পলাশ রানা ও তার তিন সহযোগীকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে জব্দ হয় বিপুল সিমকার্ড, মোবাইল ফোন ও প্রযুক্তি সরঞ্জাম।
আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশনাটি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “অভিযোগ হাতে পেয়েছি। যাচাই-বাছাই ও প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর এটি নিয়মিত মামলায় রূপ নেবে।”
বিজ্ঞাপন
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শেফাউল ইসলাম রিপন নামে ওই অ্যাডভোকেট জানান, মামলা হলে তিনি আদালতেই এর জবাব দেবেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রতারক পলাশ রানার জামিন আবেদন ব্যর্থ হলে গত ৩ আগস্ট শিশু আদালতে পলাশের বয়স দেখানো হয় ১৭ বছর ৭ মাস। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই জামিন মঞ্জুর হয়।
কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে আসে ভিন্ন চিত্র। জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ১ জুন ২০০০, মামলার এজাহারেও বয়স ২৫ বছর উল্লেখ আছে। অথচ জন্মনিবন্ধনে লেখা হয়েছে ১৫ জানুয়ারি ২০০৮। এই অসঙ্গতিই ফাঁস করে দেয় পুরো কূটকৌশল।
গত ১২ আগস্ট দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী সরওয়ার হোসেন বাবুল বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু বকর সিদ্দিক ছানা জানান, ভুয়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে নেওয়া জামিন বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রিপন আকন্দ/এমটিআই