চারটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে দুদক। অভিযানকালে তিনটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন দুদকের সদস্যরা। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুদকের খুলনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম অভিযান পরিচালনা করেন। টিমের অন্য দুজন সদস্য হলেন, উপ-সহকারী পরিচালক শামীম রেজা ও মো. রুবেল হোসেন। 

দুদকের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, চারটা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। চারটি অভিযোগের মধ্যে তিনটির সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগ চারটি ছিল, নির্ধারিত ৩ টাকা টিকিটের পরিবর্তে ৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। যেটার সত্যতা আমরা পেয়েছি।

দ্বিতীয়ত, ডাক্তাররা রোগীদের যে ব্যবস্থাপত্র দেন, ফার্মেসি থেকে সেই ওষুধ প্রদান করা হয় না। আমাদের টিমের একজন রোগী সেজে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ফার্মেসিতে গিয়েছিল। সেখানে সচরাচর প্যারাসিটামল এবং গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ছাড়া কিছু দেওয়া হয় না। নাপা থাকা সত্ত্বেও সেটা দেয় না। এটার সত্যতা আমরা পেয়েছি।

তৃতীয়ত, এখানে আবাসিক রোগীদের খাবারের মান খুব নিম্নমানের। আজকের যে ডায়েট ছিল সেখানে ৪৮০ টাকা মূল্যের যে রুই মাছ এবং চালের যে পরিমাণ বা কোয়ালিটির কথা বলা হয়েছে, তার থেকে আমরা নিম্নমানের কোয়ালিটি পেয়েছি এবং পরিমাণেও কম দিয়েছে।

চতুর্থ অভিযোগ ছিল ডাক্তাররা ঠিকমতো অফিস করেন না। ১৬ জন ডাক্তারের ভেতর চারজন সংযুক্ত ছিল। একজন ডাক্তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েছিলেন কিন্তু রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করেননি। বাকিরা যারা আসেননি তারা আমাদের কাছে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা দিতে পেরেছেন। উনারা অন্যান্য জায়গায় ব্যস্ত আছেন। কিন্তু অফিস আদেশ বলেই।

তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা দুদক কমিশন বরাবর রিপোর্ট দেব। কমিশন এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে আমরা বিষয়টা অবহিত করেছি, তিনি তার মতো করে ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।  

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরা বলেন, জনবল কম থাকায় রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাবার নিয়মিত পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। নির্ধারিত টিকিটের মূল্য থেকে বেশি নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় ডাক্তারদের শর্ট স্লিপের ওষুধ সরবরাহ সম্ভব হয় না।  

এদিকে রোগীদের জন্য খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রাখি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. সেলিম সরদার বলেন, সরকার নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী সব কিছুই সরবরাহ করি।

মোহাম্মদ মিলন/এমএএস