সীমান্ত শুধু বিভক্তির দেয়াল নয়, কখনও তা মানবিকতার সেতুবন্ধনও হয়ে ওঠে। এমনই এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনার জন্ম দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

মৃত ভারতীয় নাগরিকের মেয়েকে সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ দিয়ে তারা মানবতার ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

শনিবার (৬ সেপ্টম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,  ভারতের নদিয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। এর মধ্যে তার এক মেয়ে বহু বছর আগে বৈবাহিক সূত্রে চুয়াডাঙ্গার আনন্দবাস গ্রামে স্বামী-সন্তান নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। শোকাহত মেয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নকে (৬ বিজিবি) জানালে তার সেই আবেদন গ্রহণ করা হয়। বিজিবি বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শনিবার বিএসএফের সহযোগিতায় সকাল ১০টা থেকে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের শূন্যরেখায় জাহানারা বেগমের মরদেহ আনা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত তার কন্যা শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ পান। হৃদয়বিদারক এ দৃশ্যে উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, ‘সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক’ মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে বিজিবি শুধু সুরক্ষা নয় বরং মানবিক মূল্যবোধকেও সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়ে থাকে। এ ধরনের ঘটনা সীমান্তবর্তী মানুষের মধ্যে আস্থা ও সৌহার্দ্যের সেতুবন্ধন রচনা করে। বিজিবি ও বিএসএফের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই ঘটনা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক মানবিক সহমর্মিতার উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে থাকবে। সীমান্তে শুধু নিরাপত্তা নয়, মানবিকতাও যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে পারে, তার এক অনন্য প্রমাণ এই আয়োজন।

আফজালুল হক/এএমকে