বাগেরহাটে ২৪ ঘণ্টার হরতালে বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষেরা। সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা টানা ২৪ ঘণ্টার হরতালে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। 

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে হরতাল কার্যকর করে নেতাকর্মীরা। এ কর্মসূচি চলবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

সকাল থেকে বিভিন্নস্থানে মিছিল করে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেন জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে তারা মিছিল করে নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দেন। নেতাকর্মীদের দাবি, চারটি আসন ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

কিন্তু রাজনৈতিক এ কর্মসূচির সবচেয়ে বড় চাপ গিয়ে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের ওপর। সকালে ভ্যানে যাত্রী তোলার অপেক্ষায় থাকা ভ্যানচালকরা বলেন, আমরা রাস্তায় বের হলেই হরতালের লোকজন ভয় দেখায়। ঠিকমতো চালাতে না পারলে পেট চালাব কীভাবে? দিন শেষে ঘরে খাবার নেই।

রিকশাচালকদের একই অভিযোগ। মো. রফিকুল নামের এক রিকশাচালক বলেন, সারাদিন বসে থাকলে হাত খালি যায়। আমাদের তো প্রতিদিন চালাতে হয় পরিবার।

ইজিবাইক চালকরা আরও বিপাকে চালক শেখ আবু হুরায়রা বলেন, ঠিকমতো ইজিবাইক চালাতে না পারলে ব্যাটারি বসে যায়। তখন আবার চার্জ দিতে হয়, তাতে খরচও বাড়ে। এতে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব।

বরিশালের ভান্ডারে থেকে আসার রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন বাগেরহাট হরতাল এ বিষয়ে আমরা জানতাম না। সাতক্ষীরা যাচ্ছি দিনমজুরের কাজ করতে। ভেবেছিলাম আজ সাতক্ষীরায় পৌঁছে কাজ করতে পারব কিন্তু এখন বাজে ১২টা এখনো পর্যন্ত বাগেরহাটের সীমানা ছাড়াতে পারলাম না। পৌঁছতে পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাবে। কাজ না থাকলে সংসার চলে না। আমাদের তো জমি নেই, হরতাল মানে আমাদের পেটের ভাত বন্ধ হয়ে যাওয়া।

এর আগে গেল ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। বাগেরহাটবাসী আপত্তি জানালেও ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেটে তিনটি আসন বহাল রাখে ইসি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। নতুন গেজেট অনুযায়ী আসন তিনটি হলো—বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। অথচ দীর্ঘদিন ধরে জেলায় চারটি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল।

শেখ আবু তালেব/আরকে