পাওনা টাকা আদায়ে দেনাদারদের নামসহ ব‍্যানার টানিয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কাঠুরে মো. ইনতাজ আলী। অভিনব এই প্রচারণায় এলাকায় সমালোচনার পাশাপাশি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের টঙ্গির চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 

স্থানীয়রা জানান, টঙ্গির চর গ্রামের বাসিন্দা মৃত জুম্মন খানের ছেলে ইনতাজ আলী ব্যাপারী দীর্ঘদিন কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন। বয়স বাড়ায় এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারেন না। কিন্তু গত ৫ বছরে স্থানীয় ৬ জনের কাছে তার প্রায় ২৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।

বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কোনো সাড়া না পেয়ে তিনি সম্প্রতি থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকেও তৎক্ষণিক কোনো সমাধান না পেয়ে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন। সম্প্রতি তিনি ৪ বাই ৫ ইঞ্চির একটি ডিজিটাল ব্যানারে দেনাদারদের নাম, টাকার পরিমাণ এবং সতর্কবার্তা লিখে বিভিন্নস্থানে টানিয়ে দেন।

ওই ব‍্যানারে ব্যক্তিদের নাম ও পাওনা টাকার পরিমাণের নিচে লেখা- ‘থানা থেকে অর্ডার এই বিষয়টা এলাকাবাসীকে জানানোর জন্য। যদি এই টাকা না দেন, তাহলে থানায় মামলা হবে।’ 

ব্যানারে আরও উল্লেখ করা ৬ জন দেনাদার এবং তাদের কাছে ইনতাজ আলীর পাওনা অর্থের পরিমাণ। তারা হলেন- দিলু ব্যাপারী – ৬,০০০ টাকা, হুমায়ুন ব্যাপারী – ২,৬০০ টাকা, সুজন ব্যাপারী – ৭৫০ টাকা, নজরুল ব্যাপারী – ২,৪০০ টাকা, বারেক গাছের ব্যাপারী – ১৩,০০০ টাকা, রতন গাছ কাটে – ২০০ টাকা। 

এদিকে এই ব্যানারের ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে কেউ এটিকে ‘সাহসী উদ্যোগ’ হিসেবে প্রশংসা করলেও আরও অনেকেই এটিকে ‘ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস’ ও ‘হেয় করার চেষ্টা’ বলেও সমালোচনা করছেন। 

ইনতাজ আলী সাংবাদিকদের বলেন, এতবার কইছি, তাও টেহা দিল না। তাই মাইনসেরে জানাইতে আর হেরারে একটু লজ্জা দিবার লাইগা এই কাম করছি। তাও যদি না দেয়, তাইলে মাইকে কইরা পাড়া-মহল্লায় বাইর হইমু। 

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এ ধরনের প্রচারণা চালাতে থানা থেকে কাউকে বলা হয়নি। ইনতাজ আলী যদি লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরকে