চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওর অঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট পঁচানো নিয়ে চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। এর পাশাপাশি, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পরও ন্যায্য দাম না মেলায় কৃষকদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা।

নাসিরনগরের কৃষক মো. জাকির বলেন, এখন সার, বীজ, শ্রম সব কিছুর খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। প্রতিমণ পাট ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু এই দামে আমাদের খরচই উঠছে না। ব্যাপারীরা কম দামে কিনে মজুত রেখে পরে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

একই অভিযোগ করেন চাষি হারিজ মিয়া। তিনি বলেন, আমরা পাট চাষ করে শেষে পুঁজিই ফিরে পাই না। খালে যথেষ্ট পানি না থাকায় পাট গাদা (পঁচানোর জন্য ডুবানো) করতে কয়েক কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। এতে শ্রম ও খরচ দুই-ই বাড়ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, নাসিরনগর, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৪ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে দেশি, তোষা, মেছতা ও কেনাফ জাতের পাট চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৫৩ হেক্টর, যা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে কেনাফ জাতের পাটের ফলন তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, নাসিরনগর অঞ্চলটি পাট উৎপাদনের জন্য অনুকূল হলেও পানির অভাব চাষিদের সমস্যায় ফেলেছে। তবে বাজার মনিটরিংয়ে আমরা সর্বোচ্চ নজর রাখব। কৃষকরা যাতে তাদের পণ্যের ন্যায্য দাম পান, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কৃষি বিভাগের হিসাবে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৬০ কোটি টাকার পাট বিক্রি হতে পারে।

মাজহারুল করিম অভি/এআরবি