রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাত দিন পর গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

অফিস আদেশ অনুযায়ী, ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামকে গোয়ালন্দঘাট থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অপরাধ শাখায় পুলিশ পরিদর্শক (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

একই আদেশে বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গোয়ালন্দঘাট থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্‌) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজনেই এই বদলি করা হয়েছে। এটি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়।

গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর ‘ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন এবং নুরাল পাগলার এক ভক্ত রাসেল মোল্লা নিহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের ওপরও হামলা চালানো হয় এবং দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে হামলাকারীরা নুরাল পাগলার কবর থেকে মরদেহ তুলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ওই রাতেই গোয়ালন্দঘাট থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, হামলায় নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা ৮ সেপ্টেম্বর রাতে অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এআরবি