সোনালী ব্যাংকের ভুলে জেল খাটলেন আবু তাহের, এখনও করছে হয়রানি
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভুলে এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা জমা হয়। পরে সেই টাকা ফেরত দিলেও জেল খাটা ও মামলাসহ নানা হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন আবু তাহের নামে এক ব্যক্তি। এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি প্ল্যাকার্ড হাতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (গানাসাস) চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এ সময় তার হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ব্যাংক কর্মকর্তার কারণে আমি হয়রানির শিকার।
বিজ্ঞাপন
আবু তাহের জানান, তিনি আগে আল-আমীর ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আমিনুল হক তার নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন।
২০২২ সালের ৬ জুলাই সোনালী ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখা ভুল করে ওই অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা দেয়। বিষয়টি তিনি প্রতিষ্ঠান মালিক আমিনুল হককে জানালে, তিনি বলেন- টাকা একজন বন্ধু পাঠিয়েছেন, যা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠাতে হবে। মালিকের নির্দেশে তাহের ওই অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তর করেন। তবে পরে সন্দেহ হলে তিনি নিজ নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৫ লাখ টাকা তুলে নেন।
বিজ্ঞাপন
এরপর সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম মামলা করলে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট পুলিশ আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করে।
আবু তাহের বলেন, গ্রেপ্তারের পর জানতে পারি টাকা আসলে ব্যাংকের ভুলে জমা হয়েছিল। অথচ আমার মালিক তখনই বিদেশে পালিয়ে যান। জেলে থাকার সময় তার পরিবার নগদ ও চেকের মাধ্যমে ব্যাংকে মোট ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা দেয় যা ব্যাংকের দাবির তুলনায় ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু এখনও মামলাটি চলমান রয়েছে। তার অ্যাকাউন্টও সচল হয়নি এবং ফেরত পাননি অতিরিক্ত জমা দেওয়া অর্থ।
অভিযোগ করে আবু তাহের বলেন, ব্যাংকের ভুলে আমি ৭ মাস জেলে ছিলাম। চাকরি হারিয়েছি, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখনও মামলা শেষ হয়নি, অ্যাকাউন্ট বন্ধ, অতিরিক্ত টাকাও ফেরত দেয়নি ব্যাংক।
বর্তমানে তিনি রাঙামাটিতে থাকেন। নিয়মিত গাইবান্ধায় আসা তার জন্য খুবই কষ্টকর। তাই তিনি সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মামলা প্রত্যাহার, অ্যাকাউন্ট সচল ও অতিরিক্ত টাকা ফেরতের জন্য।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখার বর্তমান ম্যানেজার ফজলে এলাহী মোবাইল ফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। গতকালও মামলার তারিখ ছিল। এখন পর্যন্ত ব্যাংক পুরো টাকা পায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি ৩ কোটি ৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। ব্যাংকের আরও প্রায় ২০ লাখ টাকা পাওনা আছে।
রিপন আকন্দ/এআরবি