আদালত প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক

মাগুরায় স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ১৩ বছর পর অসিত কুমার বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রণয় কুমার দাস এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অসিত কুমার বিশ্বাস পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বরিশালের আগৈলঝরা উপজেলার প্রফুল্ল গাইনের মেয়ে প্রার্থনা রানী (২৮) স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে ২০০৬ সালে মাগুরার শ্রীপুরে আসেন। কর্মস্থল শ্রীপুরের খামারপাড়া এলাকায় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকাকালীন তার ছেলে অসিত কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে প্রার্থনার। পরবর্তীতে তারা বিয়ে করে একসঙ্গে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী পার্শ্ববর্তী হরিন্দী গ্রামে আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। তাদের ঘরে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু পেশায় স্বর্ণকার অসিত কুমার বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রার্থনার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকেন। এর জন্য তারা তাকে নির্যাতন ও মারপিট করতে থাকেন। 

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সময় প্রার্থনা বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর দাবি করা মোটা অংকের যৌতুকের টাকা এনেও দেন। সর্বশেষ যৌতুকের টাকার দাবিতে গত ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অসিত বিশ্বাস তাকে মারপিট করে ও গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রার্থনার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। 

পরদিন ২ ফেব্রুযারি প্রার্থনার মামা বরিশালের আগৈলঝরা গ্রামের গণেশ চন্দ্র করের ছেলে গৌতম কর শ্রীপুর থানায় অসিত বিশ্বাস ও তার মা নিভা রানীকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক অসিত কুমার বিশ্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। তবে নিভা রানীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় আদালত তাকে খালাস দেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক জানান, মামলা চলাকালে আসামি অসিত কিছু দিন হাজত বাস করেন। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। যে কারণে আসামির অনুপস্থিতিতেই এ রায় দেন বিচারক।

আরএআর