ঠাকুরগাঁও শহরে দিন দিন বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। ড্রেনেজ ও ডাস্টবিনের অব্যবস্থাপনার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জমে থাকছে পানি। এতে এডিসসহ নানা প্রজাতির মশার বংশবৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে শহরজুড়ে বেড়ে গেছে ডেঙ্গুর ঝুঁকি।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে ময়লা-আবর্জনায়। কোথাও আবার জমে থাকা পানিতে জন্ম নিচ্ছে মশার লার্ভা। অনেক এলাকায় নেই ডাস্টবিন। আর যেগুলো আছে, সেগুলোর অবস্থাও বেহাল।

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, শহরের ১২টি ওয়ার্ডে মশা নিধনের জন্য রয়েছে মাত্র ৪টি ফগার মেশিন। আর ওষুধ কেনার জন্য বছরে বরাদ্দ থাকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।ৎ

পৌরবাসীর অভিযোগ, এই সমস্যার সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গোয়ালপাড়া এলাকার রনি বলেন, ড্রেনের অবস্থা এত খারাপ যে চারপাশে শুধু দুর্গন্ধ আর মশা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

স্থানীয় সুমন, রবিন, রুবেল রানা ও কাজী মাহাফুজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মশক নিধনের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। আমরা পৌরসভায় বাস করি, ট্যাক্স দিই, কিন্তু সুবিধা পাই না। এভাবে চললে কোনোভাবেই ডেঙ্গু ঠেকানো যাবে না। মূল সমস্যা হলো ড্রেন আর ময়লার সঠিক ব্যবস্থাপনা।’ একই অভিযোগ মুন্সীপাড়া এলাকার ফিরোজা বেগমের। তিনি বলেন, কত বছর আগে মশানিধন কার্যক্রম করা হয়েছে, সেটা এখন আর মনে নেই। এভাবে চললে কী করে হবে?

পৌরসভার প্রশাসক সরদার শাহীন বলেন, আমরা নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছি। পাশাপাশি আরও জোরদার পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ড্রেন পরিষ্কার রাখার দিকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

এদিকে বর্ষা মৌসুম শেষে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যাওয়ার কথা থাকলেও জেলায় উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, চাপ পড়ছে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। বাড়ির ভেতর ও আশপাশে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, সেই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

এদিকে গত তিন মাসে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৪৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধু ফগার মেশিন বা ওষুধ ছিটিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়। ড্রেনেজ ও ডাস্টবিন ব্যবস্থার উন্নয়নছাড়া স্থায়ী সমাধান মিলবে না।

রেদওয়ান মিলন/এএমকে