ময়মনসিংহে দৃশ্যমান ফ্যাসিস্টদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শহীদ ও আহত পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে জুলাই যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা আমরণ অনশনসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ করে। 

সোমবার (৬ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনের মতো ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে ফ্যাসিস্টদের গ্রেপ্তার, শহীদ ও আহত পরিবারের নিরাপত্তা দাবিতে এ অনশন করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কাজ করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শিবিরুল ইসলাম। 

এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করে শহীদ ও আহত সেল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিপ্লবী জুলাই যোদ্ধা ময়মনসিংহ বিভাগ।

বিপ্লবী জুলাই যোদ্ধার ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ ও আহত সেলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমন্বয়ক আল নূর আয়াস আমরণ অনশনের ঘোষণা দিলে তাতে যোগ দেন বিভাগের আরও শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিরা। বিভাগের শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিরা অনশনে সংহতি জানাতে আসেন। তারা আল নূরের পাশে বসে বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। গতদিন ও রাতভর থেমে থেকে চলা বৃষ্টির মধ্যে শহীদ পরিবারের নারী সদস্যরাও স্বজন হত্যার বিচারে স্লোগান দেন। 

অনশনে যোগ দেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার শালচূড়া গ্রামের শহীদ শাহাদাত হোসাইনের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় তিনি ঢাকায় ও তার শ্বাশুড়ি শেরপুর আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন। কিন্তু এখন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা মামলা তুলে নিতে তাকে হুমকি দিচ্ছে। মামলায় আওয়ামী লীগের এক নেতা গ্রেপ্তার হলেও শেরপুর আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে গেছে। 

অনশনে বসা আল নূর মোহাম্মদ আয়াস বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও দৃশ্যমান বিচার দেখছি না। বরং প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের দোসররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি চন্দন কুমার পাল গ্রেপ্তার হওয়ার ১৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্তি পেয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। তার জামিন হয়েছে মোটা অংকের টাকায়, খুবই গোপনে। এগুলো প্রশাসনের আসকরা ছাড়া কোনোভাবেই হতে পারে না। 

আমরণ অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেওয়া এনসিপি ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এটিএম মাহবুবুল আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এটি দুঃখজনক। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/এমএএস