আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ উঠেছে শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় অবস্থিত আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষে সভাপতি মনোনয়ন প্রসঙ্গে-শীর্ষক এক চিঠিতে তিনি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লার স্বাক্ষর জাল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

‘স্বাক্ষর জাল করিনি, স্ক্যান করে বসিয়েছি’-এমন মন্তব্য করে আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা থেকে এক চিঠিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষে সভাপতি মনোনয়ন বিষয়ক চিঠি চেয়ে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুস্মিতা সাহাকে প্রধান করে, সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা) নাজমুন নাহান নাঈম এবং সহকারী কমিশনার (গোপনীয়) দীপ্ত চক্রবর্তীকে সদস্য করে একটি চিঠি প্রস্তুত করি। কিন্তু চিঠিটি পাঠানোর সময় জেলা প্রশাসক অসুস্থ থাকায় তার স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুস্মিতা সাহার সঙ্গে পরামর্শ করে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসিয়ে দিই।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, এ বিষয়টি পরবর্তীতে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুস্মিতা সাহা বলেন, আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের বিষয়ে ওই শিক্ষক আমার সঙ্গে মৌখিকভাবে আলোচনা করেছিলেন। আলোচনাটি ছিল আমাকে কমিটিতে রাখা হবে কি না, সেই বিষয়ে। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) স্বাক্ষর নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমি কেন ডিসির স্বাক্ষর স্ক্যান করে তাকে বসাতে বলব? তিনি যদি এমনটি বলে থাকেন, তাহলে সেটা সম্পূর্ণ অসত্য। পরে জানতে পারি, ঢাকা বোর্ডে পাঠানো অ্যাডহক কমিটির সুপারিশপত্রে জেলা প্রশাসকের স্ক্যান করা স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা) নাজমুন নাহান নাঈম বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম ৯ সেপ্টেম্বর আমাদের সঙ্গে মৌখিকভাবে কথা বলেছিলেন। তিনি শুধু জানিয়েছিলেন, ১৫ দিনের মধ্যে চিঠিটি ঢাকায় পাঠাতে হবে। এর বাইরে তার সঙ্গে আর কোনো বিষয়ে কথা হয়নি।

আরেক সহকারী কমিশনার (গোপনীয়) দীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, অ্যাডহক কমিটিতে আমাকে সদস্য করা হবে, এতটুকুই জানিয়েছিলেন ওই প্রধান শিক্ষক। এর বাইরে তার সঙ্গে আমার আর কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি। স্বাক্ষরটি তিনি নিজের সিদ্ধান্তেই জাল করে বসিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জাল করেছেন বলে আমি জানতে পেরেছি। আমি এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জহির হোসেন/এমএএস