স্বর্ণপদকজয়ী তরুণ উদ্ভাবক জিহাদের পাশে তারেক রহমান
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা তরুণ উদ্ভাবক ও গবেষক জাহিদ হাসান জিহাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মেধাবী তরুণদের উৎসাহ দিতে এবং তাদের উদ্ভাবনী কাজের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি জিহাদকে আর্থিক সহায়তা ও শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পরানপুর গ্রামের জিহাদের বাড়িতে যান ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল। তারেক রহমানের পক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন জিহাদের হাতে আর্থিক অনুদান ও প্রেরণামূলক বার্তা তুলে দেন।
বিজ্ঞাপন
গত সেপ্টেম্বর মাসে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন কমপিটিশন অ্যান্ড এক্সিবিশন (ডব্লিউআইসিই) ২০২৫-এ অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান জিহাদ। ১৭টি দেশের ২০০’র বেশি প্রতিযোগীর মধ্যে তার উদ্ভাবিত হেক্সাগার্ড রোভার রোবটটি আইটি ও রোবোটিক্স বিভাগে স্বর্ণপদক অর্জন করে।
প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির উপকোষাধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মো. আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি এবং সংগঠনের সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদাত হোসেন ও বুয়েট ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ।
বিজ্ঞাপন
এ সময় জিহাদের পাশে ছিলেন তার মা মোছা. নাসিমা খাতুন, বোন সুমাইয়া তাসমিন ঈশিতা এবং গবেষণা দলের সদস্য খাজা মুদাছির ইবনে আজম, মো. স্বপন আলী, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাব্বির, মোহাম্মদ সাব্বির হাসান, মো. মজিতুল ইসলাম সিফাত, মোহাম্মদ নাসিম হোসেন নূর ও মোহাম্মদ হাসিবুল হাসান।
জানা গেছে, জাহিদ হাসান জিহাদ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা খাতুনের ছেলে এবং এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা জিহাদ ছোটবেলা থেকেই উদ্ভাবনী কাজে আগ্রহী। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর রোবট তৈরি করে তিনি দেশ-বিদেশে আলোচনায় আসেন।
আরও পড়ুন
তার উদ্ভাবিত হেক্সাগার্ড রোভার একটি মাল্টিফাংশনাল রোবট, যা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। এটি বোমা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ, অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার তৎপরতা, কৃষি ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা, শিল্পকারখানার পর্যবেক্ষণ, চিকিৎসা ও জরুরি সামগ্রী সরবরাহসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। রোবটটির কাঠামো উচ্চ তাপ সহনীয় স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি, যা ১ হাজার ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও কার্যক্ষম থাকে। এতে রয়েছে তিন ধরনের ক্যামেরা, সেন্সর, রোবোটিক হাত এবং আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ।
জিহাদ বলেন, এই উদ্ভাবনের জন্য আমি কোনো সরকারি সহায়তা পাইনি। পরিবারের সহায়তা ও নিজের সঞ্চয়ের টাকায় মালয়েশিয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। সরকার পাশে থাকলে এমন কিছু উদ্ভাবন করতে পারি, যা বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
তিনি আরও জানান, গত ২১ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার সেগি ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ইন্দোনেশিয়ান ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইওয়াইএসএ)। ‘চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবোটিক্স ক্লাব’-এর হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি ‘আইটি অ্যান্ড রোবোটিক্স’ বিভাগে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
আফজালুল হক/এআরবি