চুয়াডাঙ্গা সদরের নেহালপুর ইউনিয়নে সদ্য ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কমিটি নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪০ সদস্যবিশিষ্ট এ নতুন কমিটি ঘোষণার মাত্র দুই দিন পরই তা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মূলত, এই কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন এমন একজন, যিনি পূর্বে আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা ছিলেন। এ তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর সংগঠনের অভ্যন্তরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে গত সোমবার (২০ অক্টোবর) নেহালপুর ইউনিয়ন এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধনের দিন থেকেই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী মিজানুর আরেফিন, যুগ্ম সমন্বয়কারী আমির হোসেন সমীর, জেলা সদস্য তানভীর রহমান অনিক, দর্শনা উপজেলা সদস্য সোহেল পারভেজ এবং জীবননগর উপজেলা সদস্যসহ আরও অনেকে।

কিন্তু কমিটি ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধান সমন্বয়কারী সাইফুল ইসলামের নাম ও পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জানা যায়, তিনি নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর জেলা পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে দেখা দেয় তীব্র ক্ষোভ ও বিব্রতকর পরিস্থিতি।

এ প্রেক্ষিতে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী খাজা আমিরুল বাশার বিপ্লব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২০ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তবে অনিবার্য কারণে অদ্য ২২ অক্টোবর থেকে এই কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। পরবর্তী অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী খাজা আমিরুল বাশার বিপ্লব ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয়ভাবে একাধিক ব্যক্তি আমাকে ছবিসহ তথ্য দিয়ে জানান যে, নবঘোষিত কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী সাইফুল ইসলাম আসলে নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আমি আগে বিষয়টি জানতাম না। যাচাই-বাছাইয়ের পর কমিটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী শনিবার জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সদ্য ঘোষিত কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে থাকা তুহিন নামে একজন নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাইফুল ইসলাম নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন, এটা সত্য। তবে আমরা এখনও কমিটি স্থগিত হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা কীভাবে এনসিপির ইউনিয়ন কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ব্যক্তিগত বিষয়। আওয়ামী লীগ করার পরও কেউ যদি এনসিপিতে এসে সহযোগিতা করতে চান, তাহলে সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কেউ আগে আওয়ামী লীগ করতেন বলে এখন এনসিপি করতে পারবেন না সেটা কি হওয়া উচিত?

আফজালুল হক/এআরবি