‘পিকআপ ভ্যানডা বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ আর ঋণের টাকা দিমু’
‘আমার এখন সারা শরীর অবশ। হাত-পা কিছু নাড়াচাড়া করতে পারি না। শরীরের কোথাও বল নেই। গত চার মাসে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার সব টাকা শেষ। এখন ঋণ করে চলতে হচ্ছে। উপার্জনের সম্বল একটা পিকআপ ভ্যান আছে। সেই গাড়িডা বিক্রি করে চিকিৎসা খরচ ও ঋণের টাকা দিমু।’
কথাগুলো বলছিলেন সাভার পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসাধীন আলাল উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
আলাল পাবনার আমিনপুর থানার কুমারপুর গ্রামের সোহরাব আলী খানের ছেলে। তিনি বর্তমানে সাভার পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রর (সিআরপি) ২নং ওয়ার্ডের ১৬ নাম্বার বেডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
আলাল বলেন, আমি দশ বছর ধরে একটি পিকআপ গাড়ি চালাই। গত কোরবানী ঈদের সময় পাবনার হাটে গরু নিয়ে গিয়েছিলাম। তখন গরু নামানোর সময় গুঁতো দেয়। এতে আমি মারাত্মকভাবে আহত হই। পরে আমাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার দুইটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। আমার কোমরের মাংস পচে গিয়েছিল। সেটা প্লাস্টিক সার্জারি করে ঠিক করানো হয়েছে। দুই হাসপাতালে ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। কিন্তু আমি সুস্থ হতে পারিনি। এখন আমি সাভারের সিআরপি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন থেরাপি নিয়ে আগে থেকে ভালো আছি। এখন হুইল চেয়ারে বসে থাকতে হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমার চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। ঢাকার দুই হাসপাতালেই আমার সব টাকা শেষ, এখন আমি ঋণী। সিআরপিতে ৩ মাস ১০ দিন থাকতে হবে। এখানে এসে সিআরপিতে ৩৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছি, আরও অনেক টাকা লাগবে।
সাভার পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসার সুজন শাওন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোগী আলালের স্পাইনাল কর্ডের সি গ্রেডের সমস্যা হয়েছে। তার ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দৈনন্দিন কাজ কর্মে কি কি সাপোর্ট লাগতে পারে এবং সে নিজে কি কি করতে পারবে সেগুলোও ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
আলালের সুস্থতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এই ধরনের রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বেশ সময় প্রয়োজন। তবে আমরা চেষ্টা করছি তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার।
লোটন আচার্য্য/আরকে