ময়মনসিংহ নগরীর বড় কালীবাড়ী এলাকার একটি পূজামণ্ডপে ঢুকে তিনজনকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত মো. মামুন আহম্মেদ ওরফে নাইকা মামুন (২৭) নামে মহানগর কৃষক লীগের এক সক্রিয় কর্মীকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানায় আহত মানিক সরকারের মা মালতি দাস বাদী হয়ে এ মামলা করেন।  

মামলায় মামুন আহম্মেদ ওরফে নাইকা মামুন (২৭) এবং মো. ইমাম নামে দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া নাইকা মামুনের বিরুদ্ধে থানায় মাদক ও মারামারির ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।    

স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারী নাইকা মামুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মহানগর কৃষক লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামুন আহম্মেদ নামে নিজের ফেসবুক আইডিতে কৃষক লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অসংখ্য পোস্ট ও ছবি রয়েছে। তবে বিগত ৫ আগস্টের পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি সখ্যতা গড়ে তুলে বেপরোয়া সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন।  

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূজামণ্ডপে তিনজনকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় থানায় চাঁদাবাজি ও হামলার মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

এর আগে বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর বড় কালীবাড়ীস্থ বন্ধুসংঘ শ্যামা পূজামণ্ডপে সন্ত্রাসী মামুন টাকা না পেয়ে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটায়। এতে অটোমিস্ত্রি মানিক সরকার (২৮), তার স্ত্রী ভারতী সরকার (২৪) এবং বড় কালীবাড়ী বন্ধুসংঘ শ্যামা পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন সরকার (৫৭) রক্তাক্ত জখম হয়। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভারতী সরকার এবং মানিক সরকারকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

বন্ধুসংঘ শ্যামা পূজা কমিটির সভাপতি রতন পালের অভিযোগ, প্রতিবারই সন্ত্রাসী মামুন পূজার সময় আমাদের কাছে টাকা চায়। এবারও সে টাকা চেয়েছিল, না দেওয়ায় পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন সরকারসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাত করেছে। এ সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল।  

এদিকে পূজামন্ডপে হামলা ও ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশের অন্যন্য কর্মকর্তারা। 

এ সময় পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পাদনের আশ্বাস দিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে পূজামণ্ডপ ও বিসর্জন এলাকায় আরও নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেন। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর