পুলিশের দাবি চুরি
থানার মালখানায় থাকা মোটরসাইকেল বিক্রির চেষ্টা, ২ দিনেও ধরা পড়েনি কেউ
নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার মালখানায় (জব্দকৃত মালামাল রাখার ঘর) থাকা একটি মোটরসাইকেল থানার বাইরে বিক্রির চেষ্টা হয়েছে। এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে থানা পুলিশ। পুলিশের দাবি, মোটরসাইকেলটি চুরি হয়েছে। তবে ঘটনার দুই দিন পার হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা।
ঘটনার পর থানার সম্পত্তি রেজিস্টারের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) হৃষিকেশ চন্দ্র বর্মন নিজেই বাদী হয়ে বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে একটি মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৫ অক্টোবর রাতে থানার মালখানা থেকে মোটরসাইকেলটি চুরি গেছে।
বিজ্ঞাপন
তবে মামলার নথিতে মোটরসাইকেল উদ্ধারের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। অথচ এসআই হৃষিকেশ বাদী হয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে আবেদন করেছিলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা নিয়ে ব্যবস্থা নিতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকার পশ্চিমপাড়া থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মাদক মামলায় আটক মুক্তা বানুর ভাই আতিক হাসান বলেন, আমার বোন ও দুলাভাইকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। তখন তাদের মোটরসাইকেলটিও থানায় নেয়া হয়। বুধবার রাতে খবর পাই, সেই মোটরসাইকেল থানার বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে। গিয়ে দেখি, সেটি আমাদেরই মোটরসাইকেল। কৌশলে কেনার কথা বলে চক্রের এক সদস্য শাহিন হোসেনকে ডাকি। কিন্তু সে বুঝে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে বাইকটি নিয়ে যায়।
শাহিন হোসেন উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের বাগডোকরা গ্রামের রবি মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক সানি বলেন, থানার মালখানায় থাকা মোটরসাইকেল বাইরে বিক্রির সময় ধরা পড়েছে এটা প্রশাসনের বড় দুর্বলতা। যদি সত্যিই চুরি হয়ে থাকে, তাহলে থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত করা হয়েছে কি না, সেটাই প্রশ্ন। থানার মালখানা থেকে যদি একটি আস্ত মোটরসাইকেল হারিয়ে যায়, তাহলে অন্য মালামাল কতটা নিরাপদ, সেটিও তদন্ত করা উচিত।
আরও পড়ুন
এসআই হৃষিকেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, গত ১৫ অক্টোবর রাতে থানায় বড় খানার আয়োজন ছিল। তখন বাইরে থেকে ডেকোরেটরের লোকজনসহ অনেকের আসা-যাওয়া হয়। পরদিন সকালে দেখি, মালখানার তালিকাভুক্ত একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন ১৩৫ সিসি নেভি ব্লু মোটরসাইকেল নেই। অজ্ঞাত চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, জিডিও করা হয়েছে।
সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, চুরির সাত দিন পর মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। ডেকোরেটরের কয়েকজন লোক এই ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা করছি। ওই রাতে থানার সিসি ক্যামেরাগুলো ত্রুটির কারণে বন্ধ ছিল। চোরদের শনাক্ত করা গেছে, তবে তারা আত্মগোপনে থাকায় গ্রেপ্তারে সময় লাগছে।
এআরবি