জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের যারা শহীদ, তারা হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বীর সাহসী। আর যারা লড়াই করেছে– তারা হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু সেই মুক্তিযোদ্ধারা (জুলাই যোদ্ধা) যখন চাঁদাবাজি করে, তখন আমাদের কষ্ট লাগে। তারা যখন আমাদের বৃদ্ধদের অপমানিত করে, আমরা কষ্ট পাই। যখন পড়ালেখার পরিবর্তে অন্যের জায়গায় গিয়ে পায়ের ওপর পা দিয়ে পরিচয় দেয়, তখন আমরা লজ্জিত হই।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। 

শহরের ঐতিহ্য কনভেনশন সেন্টার মিলনায়তনে পলিটেকনিক শিবির এ আয়োজন করে।

রেজাউল করিম আরও বলেন, মেধাবীরা যদি চরিত্রহীন হয়, তাহলে এই জাতির জন্য সেই মেধাবীরা কলঙ্কের তিলক। আমাদের দেশ দুর্নীতিতে ৪ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এই চ্যাম্পিয়ানশিপ অর্জনের পেছনে আমার দেশের রিকশাচালক, কুলি-মজুর, যারা খেটে খাওয়া মানুষ এরা দায়ী নয়। শিক্ষিত কিন্তু চরিত্রহীন মানুষেরা দায়ী। ওই সচিব, ওই আমলা, ওই ইউএনও, ওই ডিসি, আমার মতো রাজনীতিবিদ, যারা পার্সেন্টিস তুলেছেন, যারা কমিশন নিয়েছে। 

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী একটি শব্দ সবচেয়ে আলোচিত, তার নাম হলো ‘চাঁদাবাজি’। আমরা শপথ নিতে চাই– এর জন্য যদি আমি দায়ী হই, সবার আগে আমাকেই ফায়ার করবা, আমাকে বাদ দিবে, প্রত্যাখ্যান করবে। যারা রাজনীতিবিদ, যারা দেশকে শাসন করবে, তারা যদি চাঁদাবাজি করে, দুর্নীতি করে, অস্ত্রবাজী করে, অন্যের পকেটে বা অন্যের পরিবারে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়, অস্ত্র ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চায়, এই দুর্নীতিবাজদেরকে ‘না’ বলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে তোমাদের।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা ৭১ দেখিনি কিন্তু ২০২৪ দেখেছি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম একটি নতুন বাংলাদেশের জন্যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অপরাজনীতি এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে নিজেদের জীবনকে বিলিয়েছে। আর স্বৈরাচার মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়েছে।

ড. রেজাউল করিম বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের একজন উপমন্ত্রী লন্ডনে ২৬৬টি বাড়ি দুর্নীতির টাকা দিয়ে কিনেছে। সব জনগণের টাকা। ৫৪ বছরের বাংলাদেশের এমপি-মন্ত্রী-রাজনীতিবিদ, যারা বিদেশে বাড়ি কেনেন, যারা বেগমপাড়া তৈরি করেন, ক্ষমতা হারানোর পর জানা যায় যারা মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা দুর্নীতি করেছেন, তাদের সব ছিল, কিন্তু আল্লাহর ভয় ছিল না।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিবিরের সভাপতি শাহাদাত হোসেন আরমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মারুফের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন– লক্ষ্মীপুর শহর শিবিরের সভাপতি একেএম ফরিদ উদ্দিন, জেলা কমিটির সেক্রেটারি আব্দুর রহমান প্রমুখ।

হাসান মাহমুদ শাকিল/বিআরইউ