চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামে একটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে সব মাছ মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। চোখের সামনে হাজার হাজার মাছ ভেসে উঠতে দেখে কান্না থামাতে পারছেন না মাছ চাষি উজির মিয়া।

গত শনিবার (১ নভেম্বর) রাতের কোনো এক সময় সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের গাইদঘাট গ্রামের উজির মিয়ার পুকুরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বিষ প্রয়োগ করে। পরদিন সকাল থেকে মরা মাছগুলো ভেসে উঠতে থাকে। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকার অন্যান্য মাছ চাষিদের মধ্যে।

স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ওই পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন গাইদঘাট গ্রামের শামসুজ্জোহার ছেলে উজির মিয়া। এ বছর তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকার কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া, গ্রাস কার্পসহ বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করেছিলেন। আর কয়েকদিন পরই মাছ বিক্রি শুরু করার পরিকল্পনা ছিল তার।

ভুক্তভোগী উজির মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি ৫০ হাজার টাকা কিস্তি তুলে ৪৬ হাজার টাকার মাছ ছাড়ি। এরপর আবার ২৭ হাজার টাকার মাছ ছেড়েছি। তারপর সাড়ে আট হাজার টাকার মাছ ছেড়েছি, এমনকি গরু বিক্রি করে ৩২ হাজার টাকার মাছ ছেড়েছি। মাঝেমধ্যে আরও মাছ ছেড়েছি।

তিনি আরও বলেন, আশা করেছিলাম, একবারে মাছ বিক্রি করে ঘর বানাবো। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল, আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। এর আগেও আমার পুকুরে একবার বিষ দেওয়া হয়েছিল, তখনও প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এক নিমিষে সব শেষ করে দিল তারা। এ ঘটনার বিষয়টি আমি সদর থানায় জানিয়েছি।

ভুক্তভোগীর ভাতিজা দীননাথপুর গ্রামের নিবিড় মিয়া বলেন, আমার চাচা উজির মিয়া চার বছর ধরে এই পুকুরে মাছ চাষ করছেন। গত শনিবার রাতে কে বা কারা পুকুরে বিষ দেয়, এতে সব মাছ মরে যায়। রোববার আমরা পুকুর থেকে পাঁচ বস্তা পচা মাছ তুলেছি, আজও প্রায় ১০ বস্তা মাছ ভেসে আছে। উনি গরিব মানুষ, একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদূর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং অভিযুক্তদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। 

আফজালুল হক/এআরবি