খুলনা বিভাগে বিএনপির একমাত্র নারী প্রার্থী সাবিরা সুলতানা
খুলনা বিভাগের মোট ৩৫টি আসনে বিএনপি ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র নারী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবিরা সুলতানা মুন্নি। তিনি ৮৬, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনো দল যশোর-২ আসনে একজন নারীকে মনোনয়ন দিল।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটি ও সাংগঠনিক টিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিজ্ঞাপন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এদিন বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করে। এর মধ্যে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ১০ জন নারী প্রার্থী রয়েছেন। খালেদা জিয়া তিনটি আসনে দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ থেকে নির্বাচন করবেন।
কে এই সাবিরা সুলতানা?
বিজ্ঞাপন
অপহরণ ও হত্যার শিকার যশোর জেলা বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজমুল ইসলামের স্ত্রী সাবিরা সুলতানা মুন্নি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি। সে সময় তিনি বিএনপির একমাত্র নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।
২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নাজমুল ইসলামকে (৪৫) ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে অপহরণ করা হয়। পরদিন সকালে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনায় তার লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনার পর ঝিকরগাছায় বিএনপি কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে নাজমুলের স্ত্রী সাবিরা মুন্নি দলের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে পুনরায় সংগঠিত হয় স্থানীয় বিএনপি। এর ফলেই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেন।
পরে বিএসএস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ডিগ্রিধারী মুন্নি রাজনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হন। স্বামীর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রত্যয় নিয়ে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। নিজের যোগ্যতা ও স্বামীর জনপ্রিয়তাকে ভিত্তি করে ইতোমধ্যেই তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে দৃঢ় অবস্থান গড়ে তুলেছেন।
মনোনয়ন পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে সাবিরা সুলতানা মুন্নি বলেন, এখনই নয়, যেদিন সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারব, সেদিন আমার অনুভূতি প্রকাশ করব।
দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে আছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণ ভোটাররা আমাকে বিমুখ করবেন না আমি শতভাগ আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, এই আসনে অর্ধেকের বেশি নারী ভোটার। আমি একজন নারী হওয়ায় অন্যদের তুলনায় এগিয়ে আছি, আর ভোটের ক্ষেত্রেও এটি আমার জন্য বাড়তি সুবিধা হবে।
রেজওয়ান বাপ্পী/এআরবি