ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ফিশপ্লেট খুলে সেখানে লাল কাপড় বেঁধে রাখে দুর্বৃত্তরা। সময়মতো বিষয়টি টের পেয়ে রেলকর্মীরা লাইন মেরামত করায় বড় দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া গেছে। তবে ঘটনাটি ঘটার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দীপক দেওয়ান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী এমন ঘটনায় রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ বা স্টেশন কর্তৃপক্ষের মামলা করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার (৮ নভেম্বর) ভোরে ফেনী শহরতলীর দক্ষিণ সহদেবপুর রেলওয়ে ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা রেলপথের যন্ত্রাংশ খুলে ফেলে। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তরা আপলাইনের ৮৯ দশমিক শূন্য ১ কিলোমিটার অংশে একটি রেলবিটের ফিশপ্লেট, ছয়টি নাট, ২০টি কার্ড স্লিপার ও ৪০টি ইআরসি খুলে ফেলে। পরে রেলবিটটি এক ফুট দূরে পাশের সিগন্যাল বাতির খুঁটির সঙ্গে লাল কাপড়ে বেঁধে রাখা হয়। খুলে ফেলা রেলবিট থেকে চট্টগ্রামমুখী লাইনের ১০০ গজ দূরে রেললাইনের ওপর লাল কাপড় টানিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

ফেনী রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের মেট (২৩ এ) ফারুক হোসেন বলেন, সকালে দায়িত্ব পালনের সময় গেটম্যান আমিনুল ইসলাম রেললাইনের ওপর লাল কাপড় ও খুলে ফেলা রেলবিট দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইন মেরামত করা হয়। সকাল ৮টার পর আপলাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এটি নাশকতা নাকি চুরির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।

ফেনী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. হারুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিডিউল অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টায় চট্টলা এক্সপ্রেস ফেনী স্টেশনে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু সীতাকুণ্ডে একটি মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় সেটি সকাল সাড়ে ৯টায় পৌঁছায়। আমাদের প্রকৌশলী দল সকাল ৭টার মধ্যেই বিষয়টি জানতে পেরেছিল, ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। ফিশপ্লেট খুলে ফেলার বিষয়টি জানা না গেলে, মালবাহী বা যাত্রীবাহী যে কোনো ট্রেনের বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এতে জানমালের ক্ষতি ছাড়াও ট্রেন চলাচল ব্যাহত হতো।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটির পর রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের একজন কর্মকর্তা জিআরপি থানায় অভিযোগ করেছেন বলে আমাকে জানানো হয়েছিল। তবে এর পর কী হয়েছে, তা আমি জানি না।

ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও মামলা হয়নি এ বিষয়ে জানতে ফেনী রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম সারোয়ারকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তারেক চৌধুরী/এআরবি