ম্যানেজার-মাঠকর্মী বরখাস্ত
সেই গৃহবধূর বদনা ও আংটি ফেরত দিলো এনজিও
বাগেরহাটের চিতলমারীতে গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার বদনা, নাকফুল ও আংটি ফেরেত দিয়েছে এনজিওর কর্মকর্তারা। শখের বদনা, নাকফুল ও আংটি ফিরে পেয়ে ওই গৃহবধূ খুশি হয়েছেন। এ ঘটনায় ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) নামের এ এনজিও সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ ও মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এছাড়া সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকাল ৪ টায় গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা বলে, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে খবর প্রকাশের পর সকাল ১০ টার দিকে এনজিওর কয়েকজন কর্মকর্তা আমার বাড়ীতে ছুটে আসেন। স্যাররা আমার শিশু কন্যাসহ আমাদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন। সব কিছু শুনে তারা আমাকে অফিসে নিয়ে আমার শখের দুটি বদনা, নাকফুল ও আংটি এবং সাদা স্ট্যাম্প দুটি ফেরত দিয়েছেন। আমি স্যারদের ব্যবহারে খুশি এবং সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
বিজ্ঞাপন
ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের নরসিংদী জোনাল ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমি ও বরিশালের জোনাল ম্যানেজার মো. মহসিন হোসাইন ও বাগেরহাটের এরিয়া ম্যানেজার মো. কবির হোসেন গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার বাড়িতে যাই। ওই গৃহবধূর বদনা, নাকফুল ও আংটি ফেরত দেওয়া হয়েছে। শ্রাবণীর তার সুবিধামত খেলাপী ঋণ পরিশোধ করবেন। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ ও মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার সাহিদুল কবীর ডাম এনজিওর সহকারী ব্যবস্থাপক-নিরীক্ষা মোঃ মনিরুল ইসলাম (আহ্বায়ক), নারায়ণগঞ্জের জোনাল ম্যানেজার মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম (সদস্য) এবং এমআইএস’র কো-অডিনেটর মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের (সদস্য) সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।”
তৌহিদুল ইসলাম দাবি করেছেন, কোনো জোর প্রয়োগ ছাড়াই গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা অভাবের জন্য স্বেচ্ছায় কিস্তির টাকার পরিবর্তে বদনা, নাকফুল ও হাতের আংটি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে ৯ হাজার ৫০০ টাকা জমা দিয়ে উক্ত মালামাল ফেরত নিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট চিতলমারী শাখা থেকে ওই গৃহবধূ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। তার স্বামী রিপন রায় কাজের জন্য এলাকা ছাড়েন। এরপর কয়েকটি কিস্তি খেলাপী হলে গত ২৯ অক্টোবর সকাল ১০ টায় এনজিওটির কর্মীরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে এনজিও কর্মী ও কর্মকর্তারা ফিল্ড থেকে ফিরে বিকেলে শ্রাবণী হীরাকে দিয়ে ২টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে হাতের আংটি, নাকফুল ও পিতলের বদনা নিয়ে নেন।
শেখ আবু তালেব/এমটিআই