রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ না আসায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর মরদেহকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষায় রাখতে হয়। এতে পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে ইন্তেকাল করেন। বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা এবং পরে সাড়ে ৪টায় জানাজা শেষে দাফনের কথা ছিল।

কিন্তু বিকেল ৪টার সময় পার হলেও পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ না আসায় সম্মাননা কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষায় বিরক্ত হয়ে মুসল্লিরা চলে যেতে শুরু করলে পরিবারের সিদ্ধান্তে বিকেল ৫টায় কাশুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য গোরস্থানে নেওয়া হলে সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক।

তার অনুরোধে মুসল্লিরা আরও প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় পুলিশ পৌঁছায়। পরে মাগরিবের নামাজের পর রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়ে ফেরার সময় মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা।

সম্মান শেষে পুলিশ সদস্যদের প্রতি অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, কেউ গালিগালাজ ও উত্তেজিত আচরণও দেখান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ দ্রুত সেখান থেকে সরে যান।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইন থেকে আসা মোজাম্মলে ও মোশাররফ নামে দুই পুলিশ সদস্য জানান, তারা ৪টা ৪৭ মিনিটে পুলিশ লাইন থেকে রওনা হন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ভাই ইলিয়াস আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। জীবিত অবস্থায় রাষ্ট্র তাকে সম্মান দিয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাকে সম্মান জানাতে যে অবহেলা করা হলো এতে পুরো পরিবারকে অপমান করা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে নুর হোসেন বলেন, প্রশাসন জঘন্য কাজ করেছে। বাবার সম্মানকে হাজারো মানুষের সামনে হেয় করেছে। আমরা পুরো পরিবার লজ্জিত।

তবে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, সময় মতো পরিবার থেকে পুলিশকে জানানো হয়নি। আগে জানালে এমন হতো না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক বলেন, দূরের রাস্তা হওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে।

রেদওয়ান মিলন/এআরবি