পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিলছে না দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কুয়াকাটায়। স্থানীয় হোটেল-মোটেল মালিক, ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমের শুরুটা অনেকটাই নীরব। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ১৬টি পেশার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে ১৬ ডিসেম্বরের পর এই সংকট কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কুয়াকাটার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা যায়, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। বিশেষ করে অটো ভ্যান চালক, ক্যামেরাম্যান, ছাতা বেঞ্চ ব্যবসায়ীসহ সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিরিবিলি সময় কাটাচ্ছেন। পর্যটকদের আগমনই এখন তাদের একমাত্র ভরসা।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, ডিসেম্বর মাস থেকে বুকিংয়ের যে চাপ থাকার কথা, সেটি এখনো হয়নি। অনেক হোটেলেই ৪০–৫০ শতাংশ কক্ষ খালি পড়ে রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন। তবে ১৬ ডিসেম্বর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের কিছুটা ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বুলেট বলেন, মৌসুম শুরু হলে আমরা সাধারণত ভালো ব্যবসার আশা করি। কিন্তু এ বছর এখনো তেমন ভিড় নেই। পর্যটক না এলে আমাদের দৈনন্দিন আয়েও প্রভাব পড়ে। লাখ লাখ টাকার মাল নিয়ে দোকানে বসে আছি কিন্তু আশানুরূপ পর্যটক নেই। 

কুয়াকাটা সৈকতের ফটোগ্রাফার আরিফ বিল্লাহ বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলে দেওয়ার কাজ করি প্রায় ৩ শতাধিক ফটোগ্রাফার। ছবি তুলেই আমাদের সংসার চালাতে হয়। আর এটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ পর্যটকদের উপস্থিতির ওপর। এমনিতে বর্ষার মৌসুমে তেমন একটা পর্যটকদের দেখা মেলে না, তাই আমরা এই শীত মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি, কিন্তু এ বছর এখনো তেমন একটা পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ করছি না। তবে আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই কুয়াকাটায় আশানুরূপ পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে। 

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপস্থিতি থাকে চোখে পরার মতো, কিন্তু এ বছর এখনো আশানুরূপ পর্যটক হয়নি। তবে এর প্রথম কারণ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে, পাশাপাশি শীতের তীব্রতাও বিগত বছরের তুলনায় একটু বেশি। তবে সামনের দিকে পর্যটক বাড়বে এমনটাই প্রত্যাশা করছি আমরা। 

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পর্যটক সংখ্যা বাড়তে পারে। পর্যটকদের নিরাপত্তা, সু-ব্যবস্থা ও সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় নিয়োজিত রয়েছেন।

এসএম আলমাস/এএমকে