সারজিস আলম
নির্বাচন কমিশন জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করেছে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, জাতীয় পার্টির যারা চব্বিশের অভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছে এবং তাদের হয়ে কাজ করেছে, তাদের সুবিধা ভোগ করেছে অবৈধ নির্বাচনের এমপি-মন্ত্রী হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের বিচারের আওতায় নেওয়া আসা উচিত। আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ করার কোনো ধরনের নৈতিক রাজনৈতিক আইনগত অধিকার নেই এবং তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হলরুমে এনসিপির জেলা শাখার আহব্বায়ক কমিটির পরিচিত সভায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সারজিস আলম বলেন, তারা (জাতীয় পার্টি) এখনো বলে বেড়ায় যে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে দেখতে চাই। তারা এমন কথাও বলে বেড়ায় আওয়ামী লীগের যারা তাদের দলের হয়ে নির্বাচন করবে তাদেরকে তারা মনোনয়ন দেবে। নির্বাচন কমিশন জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে স্পষ্ট প্রতারণা করেছে তাদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়ে। আমাদের জায়গা থেকে সুস্পষ্ট করে জানাতে চাই- এটা এনসিপি কোনোভাবেই সমর্থন করবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। অভ্যুত্থানের এক বছর তিন মাস পেরিয়ে গেছে। তার জায়গা থেকে তিনি বাধা অনুভব করতেই পারেন, আমরা সেটা জানি না। আমরা রাজনৈতিক দলের জায়গা থেকে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে এতটুকু বুঝতে পারি অন্তত এই বাংলাদেশে আসলে তার জন্য কোনো সমস্যা হওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ তার একটা নিজের দেশ। সে রকম একটা অনুভূতি তিনি পাবেন। আমরা মনে করি সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ তাদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচন হবে। আমরা কাদা ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। কেউ যদি অপ্রত্যাশিত কাজ করে আমরা সেটাও সমর্থন করব না। যৌক্তিক সমালোচনা করব।
বিজ্ঞাপন
সারজিস আলম বলেন, কিছু কিছু পুলিশের সদস্য রয়েছেন যারা এখনো লেনদেনের সাথে অভ্যস্ত এবং টাকা ছাড়া কাজ করেন না। আবার টাকার বিনিময়ে তারা অনেক নিরপরাধ মানুষকে দোষী সাব্যস্ত করেন। টাকার কারণেই অনেক অপরাধী মানুষকে ছেড়ে দেয়। কয়েকটা থানার ওসিদের মধ্যেও এই প্রবণতা দেখেছিলাম। আপনারা জানেন নির্বাচনের কারণে এরই মধ্যে ওসি, ইউএনও, জেলা প্রশাসক ও এসপিদের পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন যারা এসেছেন তাদের প্রতি আস্থা রেখেই কিন্তু এই দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যেও অনেকেই আছেন তাদের পূর্বের থানার রেকর্ড ভালো না। প্রত্যাশা করব সরকার যে তাদের ওপর আস্থা রেখেছে তারা যেন সেই প্রতিদান দেয়। অন্যথায় এনসিপি বসে থাকবে না। যে প্রশাসনের লোক দলের হয়ে কাজ করবে তার বিরুদ্ধে আমরা সরাসরি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করব।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড- অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল তা তৈরি হয়নি। সরকারের পক্ষে থেকে হয়তো চেষ্টা আছে, কিন্তু আমরা যখন মাঠ প্রশাসনে দেখি তখন দেখি পূর্বের যে একটা চর্চা কোন দল ক্ষমতায় আসতে পারে, কে এমপি-মন্ত্রী হতে পারে ওই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয় কৃষিবিদ গোলাম মুর্তজা সেলিম, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার এনসিপির আহ্বায়ক মো. রফিকুল আলম, সদস্য সচিব মো. খলিলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রায়হান অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রেদওয়ান মিলন/আরএআর