ঝালকাঠির বড় বাজারের ড্রেনে পশুর জমা বর্জ্য
বড় বাজারের এই মাংসের দোকানের সামনেও ড্রেনে বর্জ্য আটকে থাকে
ঝালকাঠি বড় বাজারের গোশত ব্যবসায়ীদের (কসাই) ব্যবসায়িক এলাকায় সঠিক পরিচ্ছন্নতা না থাকায় ড্রেন আটকে মারাত্মক দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে। পশু জবাইয়ের পরে চামড়া খসানোসহ গোশত বিক্রির প্রক্রিয়াকরণের সময় উচ্ছিষ্টাংশ পরিষ্কারে পৌরসভার নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় ময়লা-আবর্জনায় আটকে রয়েছে। তা পচে ড্রেন থেকে মারাত্মক অসহ্য দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থার কারণে ওই স্থানের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও বাজারে আগন্তুকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ঝালকাঠি পৌরসভা এলাকার সবচেয়ে বেশি গোশত বিক্রি হয় বড় বাজারে। প্রতিদিন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে এক ডজনেরও বেশি গরু-ছাগল পৌরসভার নির্ধারিত জায়গায় জবাই দিয়ে ভ্যানে করে নেওয়া হয় বড় বাজারের মাংস বিক্রির স্থানে। সেখানে জবাইকৃত পশুর চামড়া খসানো, ভুঁড়ি আলাদা করাসহ গোশত বিক্রির উপযোগী করতে যাবতীয় প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।
জানা গেছে, ঝালকাঠি পৌরসভা এলাকার সবচেয়ে বেশি গোশত বিক্রি হয় বড় বাজারে। প্রতিদিন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে এক ডজনেরও বেশি গরু-ছাগল পৌরসভার নির্ধারিত জায়গায় জবাই দিয়ে ভ্যানে করে নেওয়া হয় বড় বাজারের মাংস বিক্রির স্থানে। সেখানে জবাইকৃত পশুর চামড়া খসানো, ভুঁড়ি আলাদা করাসহ গোশত বিক্রির উপযোগী করতে যাবতীয় প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় রক্ত, মল, উচ্ছিষ্টাংশসহ সব ধরনের বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে ড্রেনে ফেলা হচ্ছে। এতে ড্রেন বর্জ্য আটকে মারাত্মক দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বড় বাজারে, হাজী জয়নাল মার্কেটে এবং পার্শ্ববর্তী হোটেলে খাবারের প্রয়োজনে আগন্তুকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকে আবার দুর্গন্ধের কারণে ওই এলাকায় না গিয়ে অন্যদিকের অস্থায়ী বাজার থেকেও গোশতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ড্রেনের মধ্যে পশু জবাইয়ের রক্ত, হাড় ও উচ্ছিষ্টাংশ। ওপরে জমাট বাঁধা রক্ত, যা থেকে অসহ্য দুর্গন্ধ আসছে। কসাইখানার ব্যবসায়ীরা এমন পরিবেশে থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হলেও জনসাধারণের নাভিশ্বাস উঠছে।
জয়নাল মার্কেটের উত্তর মাথার একটি দোকানে শীতপোশাক ক্রেতা আশিক শান্ত জানান, যে গন্ধ, তাতে পেট ফুলে উঠছে। পোশাক না কিনে অন্য দোকানে যাচ্ছি।
কসাইখানা (গোশত ব্যবসায়ী) এলাকা থেকে দুর্গন্ধ আসছে। আমরা গোশত কিনতে গেলে তা টের পাচ্ছি। কিন্তু তাদের কিছু বলি নাই। কারণ আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করে নাই এবং আপত্তিও জানায়নি।
মো. লাল মিয়া খলিফা, সভাপতি, বাজার ব্যবসায়ী কমিটি
হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে আসা রুহুল আমীন জানান, গোশত পট্টির পাশের দোকানের নিয়মিত কাস্টমার আমি। প্রতিদিন খাবার খেতে গেলেই দুর্গন্ধে খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়। এখন বাধ্য হয়ে অন্যত্র খাওয়ার চিন্তা করছি। কারণ একদিকে খেতে পারছি না, অন্যদিকে গন্ধের কারণে পেটেও সমস্যা হচ্ছে। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে।
ক্রেতা ইউসুফ আলী জানান, বাজারে গোশত কিনতে গেছিলাম। মুখে মাস্ক ছিল। কিন্তু যে দুর্গন্ধ, তাতে মাস্কও কাজ করে না। তা ভেদ করে দুর্গন্ধ পেটে ঢুকে গেছে। এ বাজার থেকে আর গোশত কেনা যাবে না বলেও অনিহা প্রকাশ করেন তিনি।
বড় বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মো. লাল মিয়া খলিফা জানান, কসাইখানা (গোশত ব্যবসায়ী) এলাকা থেকে দুর্গন্ধ আসছে। আমরা গোশত কিনতে গেলে তা টের পাচ্ছি। কিন্তু তাদের কিছু বলি নাই। কারণ আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করে নাই এবং আপত্তিও জানায়নি।
এ বিষয়ে বাজারটি ঝালকাঠি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরুণ কুমার কর্মকার ঢাকা পোস্টকে জানান, আগে যারা মেয়র, কাউন্সিলর ছিলেন, তারা যথাযথ পরিকল্পনায় ড্রেন তৈরি করেননি। সঙ্গে স্লাবের ব্যবস্থা করেননি। বর্তমানে আমরা পৌরসভাকে একটি পর্যায়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। মেয়র পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ালেও সঠিকভাবে তারা কাজ করছে না।
অন্যদিকে পৌরসভার নির্ধারিত জায়গায় কসাইরা পশু জবাই না করে রাতের আঁধারে বড় বাজারেই জবাই করে যার রক্ত জমাট বেঁধে ড্রেন আটকে যায়। আমরা ডাম্পিং ইনস্টিটিউশন করার জন্য জায়গা কিনেছি। এটির পুরোপুরি কার্যক্রম চালু করতে পারলেই সমস্যার সমাধান হবে।
এনএ