মুখর রংপুরের ঈদগাহ-মসজিদ
করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে বিভাগীয় নগরী রংপুরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। চিরাচরিত কোলাকুলি আর করমর্দন ছাড়াই এবার একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা।
বিশেষ মোনাজাতে করোনার বিস্তার থেকে মুক্তিসহ সারাবিশ্বের মুসলমানদের ওপর দমন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ ও মুসলিম উম্মাহর হেফাজতে মহান আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
বুধবার (২১ জুলাই) সকাল আটটায় প্রধান ঈদজামাত অনুষ্ঠিত হয় রংপুর জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে। এতে কয়েক হাজার মুসল্লি শারীরিক দূরত্বে থেকে নামাজ আদায় করেন।
বিজ্ঞাপন
এক ঘণ্টার পর একই মসজিদে দ্বিতীয় ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় ঈদের বিশেষ খুতবা। পরে করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তিসহ দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
সেখানে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্টজন এবং সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।
বিজ্ঞাপন
নামাজ শুরুর আগে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার, সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসক। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর কোর্ট মসজিদে ঈদজামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলার সবচেয়ে বড় মসজিদ কারামতিয়া জামে মসজিদে সকাল আটটা ও নয়টা পৃথক দুটি জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
পরে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় ঈদজামাত। এছাড়াও রংপুর নগরের মহল্লাভিত্তিক মসজিদ ও বিভিন্ন ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে দশটায় পর্যন্ত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়াও পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলার স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে সুবিধাজনক সময়ে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
রংপুর জেলার প্রায় ৬ হাজার মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদজামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ৭৫টিসহ জেলার ১২০০ ঈদগাহ মাঠে ও পাড়ামহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোনো কোনো মসজিদে ছিল একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা।
ঈদের জামাত শেষে মোনাজাতে মহান আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে মহামারি করোনা থেকে মুক্তির ফরিয়াদ জানান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। পরে কোলাকুলি আর করমর্দন ছাড়াই সালামের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন মুসল্লিরা।
ঈদ উপলক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এছাড়া ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে জেলার হাসপাতাল, এতিমখানা, কারাগার ও শিশু পরিবারগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর