অভিমানী চিকিৎসকের চিরকুট লিখে আত্মহত্যা
মিরাজুল হাসান তুষার
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় পৈতৃক সম্পত্তির জেরে মায়ের ওপর অভিমান করে মিরাজুল হাসান তুষার (২৮) নামের এক চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে পৌর শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে নিজেকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। যেটি পরে উদ্ধার করে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
মিরাজুল পৌর এলাকার সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার আবেদ হাসানের ছেলে। তিনি স্থানীয় ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল হেলথ সেন্টারের চক্ষুশিবিরের সহকারী চিকিৎসক ছিলেন।
পারিবারিক তেমন কোনো ঝামেলা ছিল না যে আত্মহত্যা করতে হবে তার। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মিরাজুল হাসান বাড়িতে একা একা থাকত। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলত না সে।
তরুলতা বেগম, মিরাজুলের মা
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবেদ হাসানের দুই স্ত্রী। মিরাজুল হাসান তুষার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। দুই ভাইয়ের মধ্যে মিরাজুল বড়। তার মা তরুলতা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার। বেশ কিছুদিন ধরে নিজেদের বাড়ি ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার রাতে মিরাজুল এই বিষয় নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে অভিমান করেন। এর জেরে রাতেই মিরাজুল নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে ডাকাডাকির পর ঘরের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। পরে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় মিরাজুলের নিথর দেহ দেখতে পান তারা।
পরে খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ মিরাজুলের মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় ‘মিরাজুল হাসান তুষার’ স্বাক্ষরিত একটি সুইসাইড নোট (চিরকুট) ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমি এ.এস.এম মিরাজুল হাসান (তুষার) স্বজ্ঞানে-স্বেচ্ছায় নিজের সম্পূর্ণ ইচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। এই আত্মহত্যার পেছনে কারো এক বিন্দু পরিমাণ কোনো দোষ নেই। সরি মা। ১৫.০১.২১ রাত ১২টা ৪০ মিনিট।’
সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা এখন পাগলপ্রায়। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে মিরাজুলের মা তরুলতা বেগম বলেন, পারিবারিক তেমন কোনো ঝামেলা ছিল না যে আত্মহত্যা করতে হবে তার। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মিরাজুল হাসান বাড়িতে একা একা থাকত। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলত না সে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে মিরাজুল আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি স্থানীয় ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল হেলথ সেন্টারের চক্ষুশিবিরের সহকারী চিকিৎসক ছিলেন।
এনএ