আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পুলিশ আটক করলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করেন

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনায় হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বরিশাল নগরী। বুধবার (২০ জানুয়ারি) ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পুলিশ আটক করলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করেন। 

এতে নগরী ও নগরী সংলগ্ন সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আলোচনা চলছে। দ্রুতই জটিলতার অবসান হবে।

এদিকে আটককৃত আওয়ামী লীগ কর্মী সোহাগ হাওলাদারের দায়ের করা একটি অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএমপি কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিসিকে জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে সোহাগ হাওলাদারকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নারী শ্রমিক উত্ত্যক্তের।

ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, আমার কারখানায় কর্মরত এক নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানি করায় সোহাগ হাওলাদারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

সোহাগ হাওলাদারকে আটকের খবর পেয়ে অবরোধের ডাক দেয় শ্রমকি সংগঠনগুলো। রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, শ্রমিক নেতা সোহাগ হাওলাদারকে মারধরের ঘটনায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত মারধরকারীকে আটক করা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত অবরোধ চলবে। 

একই বক্তব্য দিয়েছেন নথুল্লাবাদ বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে, থ্রি-হুইলার মালিক শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি লিটন মোল্লা। শ্রমিকরা সোহাগ হাওলাদারকে মারধরের প্রতিবাদ জানিয়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন বলে জানিয়েছেন নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সন্ধ্যায় শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে কাউনিয়া থানা ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এ সময় থানায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাদের দেখা গেছে। থানা ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধরা সোহাগ হাওলাদারের দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য চাপ দেন। 

বিএমপির উপকমিশনার ফয়জুল করিম বলেন, বিসিকে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ফরচুন সুজের মালিক মিজানুর রহমানসহ তিনজনের মারধরের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সোহাগ হাওলাদার। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

বিএমপির কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, মামলা তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হবে। তদন্তে যিনি দোষী হবেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে সোহাগ হাওলারকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে ফরচুন সুজের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে অবস্থান অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। 

এএম