সন্তানের মুখ দেখা হলো না রাজিবের
মর্জিনা-আজহার দম্পতির দুই সন্তান তানিয়া ও রাজিব। দুই সন্তান নিয়ে ঠিকাদার আজহারের সংসারে আনন্দের কমতি ছিল না। বছর খানেক আগে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছেলেকে বিয়ে দেন। বিয়ের মাস তিনেকের মাথায় পরিবারে নতুন সদস্যের আগমনের খবরে পুরো পরিবার আনন্দে ভাসছিল। স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত নতুন সদস্যের বয়স সাত মাস। এরই মধ্যে নতুন জামাসহ অন্যান্য জিনিস কেনার প্রতিযোগিতা চলছিল বাবা-ছেলের মধ্যে।
কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা পরিবারের সব স্বপ্নকে থামিয়ে দিল। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা বাজার এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন রাজিব হাসান (২৩)। উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বেতঝুড়ি গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে রাজিব পেশায় ফার্নিচার বিক্রেতা। এ ঘটনায় রাজিবের খালাতো ভাই শরিফ আহত হয়েছেন। শরিফের বাড়ি টাঙ্গাইলে। তিনি সম্প্রতি খালার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
রাজিবের চাচা আমজাদ হোসেন জানান, তৈরি ফার্নিচারের ব্যবসা করে বাবার সংসারে সহযোগিতা করছিল রাজিব। শনিবার রাতে ফার্নিচার ব্যবসার মালামাল আনতে মোটরসাইকেল নিয়ে বারতোপার নিজ দোকান থেকে মাওনা চৌরাস্তায় যাচ্ছিল। এ সময় শরিফ তার পেছনে বসেছিল।
মোটরসাইকেল নিয়ে মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের মাওনা বাজার এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ ব্রেক করে অজ্ঞাত একটি কাভার্ডভ্যান। ওই কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেলসহ ছিটকে অপর একটি অটোরিকশার নিচে চাপা পড়েন রাজিব ও শরিফ।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আল-হেরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত শরিফকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
রাজিবের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না তার প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমান আক্ষেপ নিয়ে বলেন, রাজিব অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিল। পথে দেখা হলেই সালাম দিত। শান্ত স্বভাবের ছেলেটি এত দ্রুত এভাবে চলে যাবে তা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, দুর্ঘটনার খবরটি থানায় কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
শিহাব খান/এসপি