পাবনার বেড়া উপজেলায় শামসুর রহমান (৮৮) নামে এক বৃদ্ধকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুর আলী। উদ্ধার করা বৃদ্ধ নাটোরের লালপুর উপজেলার দয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, কিছুদিন ধরেই এই বৃদ্ধ বেড়ার কাজিরহাট ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিলেন। কলা-রুটি দিলেও তিনি ঠিকমতো খেতে পারতেন না। শুধু কাঁদতেন। সর্বশেষ বাস টার্মিনাল এলাকার রাস্তায় জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।

তিনি অসুস্থতার কারণে খুব বেশি তথ্য দিতে পারছেন না। শুধু নাম আর ঠিকানা বলতে পারছেন। তিনি এখানে কীভাবে এলেন জানতে চাইলে জানিয়েছেন, তিনি অনেকদিন ধরে পায়ের সমস্যায় ভুগছেন। সন্তানেরা চিকিৎসা না করে এখানে ফেলে গেছে। স্থানীয়রা আরও জানায়, তিনি বারবার একটা কথাই সবাইকে বলছিলেন, ‘আমাকে আপনারা চিকিৎসা করান। হাসপাতালে নিয়ে চলেন। আমি বাঁচতে চাই।’

বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে পোস্টটি নজরে আসে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুর আলীর। তিনি শুক্রবার রাতে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। শনিবার দুপুরে ইউএনও নতুন জামা-কাপড় নিয়ে তাকে দেখতে যান। এ সময় বৃদ্ধের শরীরের অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন ইউএনও।

বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. ফাতেমাতুয-জোহরা বলেন, বৃদ্ধকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার পায়ে পচন ও পোকা ধরেছে। ডায়াবেটিস উচ্চমাত্রায় থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে একটু ভালো করে ট্রিটমেন্ট দিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

ইউএনও সবুর আলী বলেন, বৃদ্ধের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বেড়া উপজেলা প্রশাসন বহন করবে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। বর্তমানে তিনি খুব অসুস্থ হওয়ায় কথা বলতে পারছেন না। সেজন্য এখনো তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হচ্ছে না। একটু সুস্থ হলেই সব তথ্য পাওয়া যাবে। পরিবারের সন্ধান পেলে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর