নারীদের শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন বৃদ্ধ এনামুল হক বুলু

বুড়ো বয়সে ভীমরতি ধরেছে ষাটোর্ধ্ব এনামুল হক বুলুর। রাজশাহী নগরীর ব্যস্ততম সাহেববাজার এলাকায় আগত নারীদের শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাতে নগরীর পাঁচানিমাঠ এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়। 

আদালতে নেওয়ার আগে বোয়ালিয়া মডেল থানায় এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস।  তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধ একেবারেই অসচ্ছল নন, কিন্তু তিনি ভিক্ষা করেন। হয়তো নারীদের হেনস্তা করতেই এমন কাজ করেন তিনি।

পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তার এমন অপকর্মে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর একই কাণ্ড ঘটিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন বৃদ্ধ। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় সেইবার তিনি পার পেয়ে যান। রোববার দুপুরের দিকে তিনি নগরীর আরডিএ মার্কেট (সাহেববাজার) এলাকায় নারীদের হেনস্তা করেন। 

একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার সেই কাণ্ডের ভিডিও ধারণ করে প্রকাশ করেন। রাতেই পুলিশের হাতে আসে ভিডিওটি। সেটি দেখে হেনস্তাকারী বৃদ্ধকে শনাক্ত করে পুলিশ। ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তিনজন ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। এ নিয়ে সোমবার ভিকটিম এক নারী তার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।  

এদিকে, ওই বৃদ্ধের রোববারের যৌন হেনস্তার ভিডিও মোবাইলে ধারণকারী সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাহেববাজার এলাকায় ওই বৃদ্ধের সঙ্গে তার প্রথম দেখা। তিনি লক্ষ্য করেন, ফাঁকা রাস্তা বাদ দিয়ে ওই বৃদ্ধ নারী পথচারীদের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় নারীদের শরীর স্পর্শ করছেন। এমন একটা ভাব-ভঙ্গি করছেন যে তিনি সাহায্য চাইছেন। কিন্তু তার পোশাক বলছিল ভিন্ন কথা। 

প্রথমদিকে তিনি বিষয়টি উড়িয়ে দিন। পরে লক্ষ্য করেন ওই বৃদ্ধ প্রত্যেক নারীর সঙ্গেই একই কাণ্ড ঘটাচ্ছেন। এরপর তিনি মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করতে করতে তাকে অনুসরণ করেন। আরডিএ মার্কেট থেকে তাকে অনুসরণ করে দেখা যায়, তিনি বেছে বেছে মেয়েদের ভিড়ের মধ্যে যাচ্ছেন। নারীদের শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিচ্ছেন।

এক পর্যায়ে স্কুলড্রেস পরা এক কিশোরীর গায়েও হাত দেন তিনি। এ সময় ওই কিশোরীর মা সঙ্গে ছিলেন। তিনি এর প্রতিবাদ করেন। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় পার পেয়ে যান লোকটি। প্রতিক্রিয়া দেখালেও হেনস্তার শিকার প্রত্যেকেই তাকে একই কারণে ছাড় দিচ্ছিলেন।

সাইফুল ইসলাম জানান, তার কাছে ওই বৃদ্ধের অপকর্মের প্রমাণ ছিল। তাকে আইনের আওতায় তুলে দিতে তিনি কেবল পুলিশ খুঁজছিলেন। বৃদ্ধকে অনুসরণ করে জিরো পয়েন্টে যাওয়ার পর সেখানে তিনি পুলিশ পাইননি। পরে জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি সেখান থেকে চলে যান। কাজ শেষে ফিরে গিয়ে আর ওই বৃদ্ধকে খুঁজে পাননি।

তবে স্বজনরা বলছেন, বুলুর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছেন। তিনি শারীরিকভাবে অক্ষম। লাঠিতে ভর দিয়ে তিনি হাটাচলা করেন। হাটতে-চলতে অন্যকে ধরেন। ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হেনস্তা করার খবর তাদের কাছে নেই।

এসপি