উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদারের ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নামে বরাদ্দ করা সরকারি গাড়ি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়েছেন এবং সভায় বক্তব্য দিয়ে তিনি নৌকা প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন।

রোববার (৩১ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ওই ইউনিয়নের তিনটি জায়গা—ঘোনাপাড়া কালীখোলা মন্দির প্রাঙ্গণ, ব্রাহ্মণডাঙ্গা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ও মেহেরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী সভা হয়। সব সভাতেই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারি বরাদ্দের গাড়িতে করে এসে সভায় যোগ দেন।

এ ছাড়া সমাবেশগুলোয় মনিরুজ্জামান সরদার ছাড়া ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর কনিষ্ঠ ছেলে শাহাদাব আকবর চৌধুরী লাবু, সংসদ উপনেতার একান্ত সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (এপিএস) মো. শফিউদ্দিন চৌধুরী, সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন এবং ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. বেলায়েত হোসেন মিয়া বক্তব্য দেন।

মঞ্চে সাদা পাঞ্জাবি ও মুখে মাস্ক পরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার 

তবে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ ওই সভাগুলোয় যোগ দিলেও তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেননি।

পুরাপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বেলায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারি গাড়িতে এসেছেন কি না, সেটা আমার জানা নেই। উপজেলার সিনিয়র নেতারা আমার পক্ষে ভোট চাইতে এসেছিলেন। তারা আমার পক্ষে ভোট চেয়ে চলে গেছেন।

‘সরকারি গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছেন কেন, জানতে চাইলে নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ব্যাপারটা আমার আগে জানা ছিল না। ভবিষ্যতে এটা আর হবে না বলে তিনি প্রতিবেদকের ফোন কেটে দেন।

যা বলা আছে আইনে
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রণিত ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা’-এর ২২ ধারার (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী কজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার করিতে পারিবেন না।’

পুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা তাপস শাখারী। এ বিষয়ে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারি গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছেন, এটা আমার জানা নেই। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী আইনে এটা তিনি করতে পারেন না।

এনএ