২১ গ্রামের বেকার নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেবে যুব উন্নয়ন
বক্তব্য দিচ্ছেন সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা
অনেক নারী পারিবারিক কাজ শেষে অলস সময় পার করেন। নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণের অভাবে কাজে লাগাতে পারেন না সময়। এবার তারা সেলাই প্রশিক্ষণ শিখবেন। সন্তান দেখাশোনা, পরিবার সামলানোর পাশাপাশি কাপড় সেলাই করে বাড়তি আয় করবেন তারা। এতে তাদের বেকারত্বও ঘুচবে। এই লক্ষ্যে বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের জন্য ১৫ দিনব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ২১টি গ্রাম থেকে বেকার নারীরা অংশ নেবেন।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সন্দ্বীপ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও আরডিএসএ ও জেলা যুব প্রতিনিধি মো. মিজানুল হক সরকারের সঞ্চালনা প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহানুর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলী।
সেলাই প্রশিক্ষণে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রশিক্ষক (পোষাক) তৃষ্ণা আক্তার রুশনা, জাহাঙ্গীরনগর নারী যুব সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি মোছা. খাইরুন নেছা প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
প্রধান অতিথি মো. শাহানুর আলম দেশে নারীদের ক্ষমতায়ন উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবস্থানসহ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও এগিয়ে যেতে হবে। আগের মতো চিন্তা-চেতনা মানুষের এখন নেই। মানুষের ভেতরে একটা পরিবর্তন এসেছে। সবাই অলস সময়ে কিছু-না-কিছু করতে চান। সময়কে কাজে লাগাতে চান।
প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নিজে কিছু করার জন্য আগে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে। অনেক মানুষ চাকরির আশায় বসে রয়েছেন। তারা এ রকম বসে না থেকে নিজে কিছু করার উদ্যোগ নিলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
আমিও একজন দরিদ্র উদ্যোক্তা। আমি চাই আমার মতো যারা আছেন, তারাও উদ্যোক্তা হোন। এতে পরিবারের দারিদ্র্য আর থাকবে না। এই বিষয়ে সামনে রেখে আমার সংগঠন কাজ করছে।
মোছা. খাইরুন নেছা, সভাপতি, নারী যুব সমাজকল্যাণ সংস্থা
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলী ২১টি গ্রাম থেকে ২৫ জন বেকার নারী সেলাই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করায় প্রশিক্ষণে মেধা অনুসারে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের একটি করে সেলাই মেশিন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম ও আদর্শে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতিটি গ্রামে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রশিক্ষক তৃষ্ণা আক্তার রুশনা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এটাতে ট্রেনার হিসেবে কাজ করছি। পাশাপাশি আমি একজন যুব সংগঠক। যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য যুব উন্নয়নের মাধ্যমে ট্রেনিংটা করানো হচ্ছে। আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে যাব। কারণ, ইউনিয়নগুলোতে ট্রেনিংয়ের জন্য সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সে জন্য আমরা গিয়ে ট্রেনিং করাচ্ছি। গ্রামগঞ্জের অসহায় দরিদ্র অল্পশিক্ষিত-শিক্ষিত বেকার যারা আছেন, তাদের আমরা কর্মমুখী করব। আর আমরা এই ট্রেনিংয়ে প্রতিটি গ্রাম থেকে একজন করে নিয়েছি। যাতে এই একজন তাদের গ্রামের বাকিদের ট্রেনিং করাতে পারেন। আমরা উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেব।
নারী যুব সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি মোছা. খাইরুন নেছা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমিও একজন দরিদ্র উদ্যোক্তা। আমি চাই আমার মতো যারা আছেন, তারাও উদ্যোক্তা হোন। এতে পরিবারের দারিদ্র্য আর থাকবে না। এই বিষয়ে সামনে রেখে আমার সংগঠন কাজ করছে।
সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ