৫ এনজিও থেকে লোন নিয়েছি, এখন মৃত্যু ছাড়া পথ দেখছি না
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের পশুহাট সংলগ্ন চারটি পাটকাঠির স্তুপের আগুন আড়াই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা আড়াই ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় চার কৃষকের প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার পাটকাঠি পুড়ে ছাই হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
বিজ্ঞাপন
এর আগে শুক্রবার রাত ৭টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গার দুটি করে মোট চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আড়াই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় আলমডাঙ্গার খাদিমপুর ইউনিয়নের রংপুর গ্রামের মৃত সোলেমান মণ্ডলের ছেলে ইয়াজ আলীর তিন লাখ, একই এলাকার মকবুলার রহমানের ছেলে শিলনের তিন লাখ, জেহালা ইউনিয়নের মৃত ওমর আলীর ছেলে তৈয়ব আলীর সাড়ে তিন লাখ ও তৈয়ব আলীর ছেলে রাজুর আড়াই লাখ টাকার পাটকাঠি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
ক্ষতিগ্রস্ত রাজু পূর্ব শত্রুতার জেরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে দাবি করে বলেন, এক সপ্তাহ আগে কেষ্টপুর গ্রামের সিদাম আলীর ছেলে আশিকের সঙ্গে আমার বাক-বিতণ্ডা হয়। পরে তিনি আমার ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। শুক্রবার আগুন ধরার পূর্বে তার সঙ্গে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। তার একটু পরেই খবর পাই আমার পাটকাঠির স্তুপে আগুন লেগেছে।
রাজুর বাবা তৈয়ব আলি বলেন, আমি পাঁচ এনজিও থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা করছি। লোন পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হয়। আমার সাড়ে তিন লাখ টাকার পাটকাঠি আগুনে পুড়ে এখন আমি নিঃস্ব। আমি লোন পরিশোধ করব কীভাবে? এখন আমার মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ নেই।
ইয়াজ আলি ও শিলন বলেন, আমরা দুজন পার্টনারে ব্যবসা করছি। আমাদের ছয় লাখ টাকার পাটকাঠি পুড়ে গেছে। এখান থেকে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসারটা টেনেটুনে চলে। এখন আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে আগুনের সুত্রপাত কোথা থেকে হয়েছে তা জানা যায়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছে তাদের ১১ লাখ টাকার পাটকাঠি পুড়ে গেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত একজনের কাছ থেকে জেনেছি পূর্ব বিরোধের জেরে এমনটি ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক রফিকুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার দুটি ও আলমডাঙ্গার দুটি মোট চারটি ইউনিটের আড়াই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সুত্রপাত হতে পারে।
আফজালুল হক/আরআই