নীলফামারীর সদর উপজেলায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মনসাপাড়া এলাকায় এসে দুই পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

পরে বউবাজারে সংক্ষিপ্ত শোকসভায় বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, এখানে আমার বলার ভাষা নেই। এ ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। অবুঝ তিন শিশুর মৃত্যুর খবরটি জানার পর আমার আর কিছুই ভালো লাগছিল না। পাশাপাশি তাদের বাঁচাতে শামীম হোসেন নামের যে যুবকটি এগিয়ে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছে, সে সাহসী উদ্যোগ নিয়েছিল। আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি বলেন, লেভেল ক্রসিং ও ব্রিজ নির্মাণসহ রেলের ধারে বসবাসকারীদের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সময় তিন সন্তান হারানো পিতা রেজওয়ান হোসেনকে ৩০ হাজার এবং শামীম হোসেনের স্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন সাংসদ।

এ ছাড়া নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ রেজওয়ানের হাতে ৩০ হাজার এবং সাহসী যুবক শামীমের স্ত্রীর হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি।

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, রেজওয়ান ও শামীমের পরিবারের পাশে থাকব আমি। এর আগে তিনি নিহতদের কবরে মাটি দেন।

শোকসভায় নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বক্তব্য দেন। এ সময় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান, পৌর সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, কুন্দপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে বউবাজার এলাকায় চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী খুলনা মেইল ট্রেনে কাটা পড়ে একই পরিবারের তিন শিশুসহ মারা যান চারজন।

ওই স্থানে রেললাইন পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছিল। নির্মাণ কাজের জন্য ইট নিয়ে একটি ট্রাক এলে সেটি দেখতে যায় শিশুরা। এ সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেন তাদের সামনাসামনি চলে আসে। পরে প্রতিবেশী শামীম ওই তিন ভাই-বোনকে বাঁচাতে গেলে তিনিও ট্রেনে কাটা পড়েন।

নিহতরা বউবাজার গ্রামের আবুল হোসেনের বড় মেয়ে রিমা আক্তার (৭), মেজ মেয়ে রেশমা (৪), ছোট ছেলে মমিনুর রহমান (৩) এবং একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শামীম হোসেন (২৬)।

এনএ