পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীকে অস্ত্রোপচারের পর পেটের মধ্যেই কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার (১২ ডিসেম্বর) তিন সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যেই ওই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মনিরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসানকে এ তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। অপর দুই সদস্য হলেন- গাইনি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা ও সার্জারি বিভাগের কামরুজ্জামান।
আজ (রোববার) জেলা আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভায় এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। ওই কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া আজ বিকেলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লিটন মিয়া ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মনিরাকে দেখেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন বলেন, এ ঘটনাটি ইতোমধ্যে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে মনিরার পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছে এসেছিল সাহায্যের জন্য। পুলিশ শুক্রবার রাতেই মেডিকেলে মনিরার ভর্তি ও শনিবার (১১ ডিসেম্বর) মেডিকেলে অস্ত্রোপচারের কাজে সহায়তা করেছে। রোগী সুস্থ হওয়ার পর আমরা আইনগত ব্যাবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করব।
প্রসঙ্গত, মনিরা খাতুন (১৮) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের খাইরুল মিয়ার মেয়ে। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি বিভাগের ইউনিট টু- তে ভর্তি ও অস্ত্রোপচার করা হয় মনিরার। এ সময় একটি কাঁচি মনিরার পেটে রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক। ঘটনার পৌনে দুই বছর পর গতকাল শনিবার ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে ওই কাঁচিটি বের করা হয়।
এ নিয়ে গতকাল শনিবার (১১ ডিসেম্বর) অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, ৬৪৩ দিন পর অপসারণ’ শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়।
জহির হোসেন/আরআই