বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি ভাটপাড়া ভূমি অফিসে ভূমি-সংক্রান্ত বিষয়ে গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) এক্টিভিস্তা বাগেরহাট ও বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে স্থানীয় পর্যায়ে ভূমি অফিসের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শুনানিতে স্থানীয় বাসিন্দারা ভূমি অফিসের বিভিন্ন অনিয়ম ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন।

স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী শেখ শওকত আলী বলেন, আমার চার বছরের খাজনা হয়েছিল ২৯০ টাকা। পিয়নের কাছে দিতে হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। আজ সাহস করে সব কথা বলেছি। স্যাররা কথা দিয়েছেন এর বিচার করবেন।

মনিরুজ্জামান নামের অপর একজন বলেন, খাজনা দিতে এলে যে টাকা খাজনা হয়, তার চেয়ে টাকা বেশি দিতে হয়। টাকা না দিলে ঘুরতে হয় অনেক দিন। আমাদের এ ভোগান্তি কবে শেষ হবে জানি না।

গণশুনানিতে স্থানীয় ভূমির মালিকরা ভূমি-সংক্রান্ত সেবা সহজীকরণের পাশাপাশি ভূমি অফিসকে দালালমুক্ত ও ঘুষবিহীন সেবা প্রদানের দাবি জানান।

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাশেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম। এ সময় রাখালগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু শামীম আছনু, বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মঞ্জুরুল হাসান মিলন, এ ফোর আই প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মুশফিকুল ইসলাম রিতু, স্থানীয় ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবকরাসহ স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়দের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাখালগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু শামীম আছনু প্রতি তিন মাস অন্তর স্থানীয় সমস্যা সমাধানে নিজ খরচে গণশুনানির ঘোষণা দেন। এবং তরুণদের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

জনসাধারণের ভোগান্তি কমাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, একক প্রচেষ্টায় দুর্নীতি রোধ কখনোই সম্ভব নয়। দুর্নীতি রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আজকের এ ধরনের গণশুনানির ফলে আমরা স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলো সঠিকভাবে জানতে পেরেছি। ফলে সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।

এ সময় দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারী ও দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

তানজীম আহমেদ/এনএ