আর রিহার্সাল নয়, আন্দোলন কাকে বলে দেখিয়ে দেব
বাসদ বরিশাল জেলার সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেছেন, ‘আজকের কর্মসূচি রিহার্সাল ছিল। আমাদের শ্রমিকদের, ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশার গায়ে যদি হাত দেওয়া হয়, তখন আর আন্দোলনের রিহার্সাল করব না। কঠোর আন্দোলন কাকে বলে তা দেখিয়ে দেব।’
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্সের দাবিতে রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ডা. মনীষা চক্রবর্তী আরও বলেন, শ্রমিকদের চেয়ে শক্তিশালী আর কেউ নেই। যেসব মহল শ্রমিকদের জিম্মি করতে চান, তাদের বার্তা দিতে চাই, আপনারা শ্রমিকদের গায়ে হাত দেওয়ার চিন্তাও করবেন না। ইজিবাইকের গায়ে হাত দেওয়ার চিন্তাও করবেন না। ব্যবাটারী চালিত রিকশার গায়ে হাত দেওয়ার চিন্তাও করবেন না।
তিনি বলেন, সরকার যখন ব্যাটারিচালিত রিকশা আর ইজিবাইকের অনুমোদন দেওয়ার জন্য খসড়া নীতিমালা করেছে, ঠিক তখনই একটি ব্যবসায়িক চক্র গাড়ির মডেল উচ্ছেদ করার জন্য রিট করেছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ওই ব্যবসায়ী চক্রটি যদি আমাদের হাইকোর্ট দেখায়, আমরাও হাইকোর্টে যেতে পারি। হাইকোর্ট কোথায়, আমরাও চিনি। একদিকে আমরা আইনগত লড়াই করব, আরেক দিকে আমরা রাজপথের লড়াই করব। শ্রমিকরা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
বিজ্ঞাপন
রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমনের সভাপতিত্বে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সড়ক অবরোধ করে শুরু হওয়া সমাবেশ বিক্ষোভসহকারে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়েও চলে। দুই ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয় সংগঠনটি।
ইমরানি হাবিব রুমন বলেন, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা আর থ্রি-হুইলার জব্দ আপনাদের করতে হবে না। আপনারা শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিন, প্রত্যেক শ্রমিককে চাকরির নিশ্চয়তা দিন, তারা গিয়েই গাড়ি জমা দিয়ে আসবে। শ্রমিকদের খাবারের নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা আর থ্রি-হুইলারের ওপর হাত দেওয়া যাবে না।
আন্দোলন থেকে বিআরটিএ প্রস্তাবিত ‘থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১’ চূড়ান্ত করার দাবি জানানো হয়। এতে একাত্মতা জানিয়ে বক্তব্য দেন নৌ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শেখ হাসেম আলী।
এর আগে রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে যোগ দিতে বরিশালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন। এতে সদর রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, ব্যাটারিচালিত ৪০ লাখ অবৈধ ইজিবাইক বন্ধে ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন বাঘ ইকো মোটরসের সভাপতি কাজী জসিমুল ইসলাম। ১৫ ডিসেম্বর বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ রিট আমলে নিয়ে অবৈধ ইজিবাইক বন্ধ ও জব্দের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এসব ইজিবাইক আমদানি ও ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। এই নির্দেশনার প্রতিবাদে কর্মসূচি পালিত হয় বরিশালে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ