নৌকার সমর্থন না করায় বিজেপি নেতার বাড়িতে বোমা হামলা
ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার সমর্থন না করায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন মানিকের বাড়িতে বোমা হামলা, ভাঙচুর ও টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ আনেন।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে ৩ নং ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
লিখিত অভিযোগে বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমার দল ভোটে অংশ নেয়নি। আগামী ৫ জানুয়ারি ভোলা সদর উপজেলাধীন পশ্চিম ইলিশা ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই নির্বাচনে আমি যেন নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করি এবং প্রচার-প্রচারণায় নামি, তার জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহির আমাকে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। আমি তার আদেশ-নির্দেশ না মানায় গত রোববার রাতে তার নেতৃত্বে তার ক্যাডার জাহাঙ্গীর, জিন্নাহ ও আব্দুর রহমানসহ তিন শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমার পশ্চিম ইলিশার বসতবাড়িতে বৃষ্টির মতো বোমা হামলা করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, অস্ত্রধারীরা আমার দুই স্কুলপড়ুয়া নাতি ফাহিম ও তাহিমকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আমার বসতঘরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। আমার বেডরুমে ঢুকে তোষকের নিচে আমার বাড়ির কাজের রড-সিমেন্ট ও অন্যান্য জিনিস কেনার সাড়ে ১০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ক্যাডাররা আমার স্ত্রী ও ছেলেকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। খবর দিলে পুলিশ এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এসব অস্ত্রধারী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পুরো পশ্চিম ইলিশায় বোমা ফাটিয়ে স্বশস্ত্র মহড়া চালাচ্ছে। জহিরের নির্দেশ না মানলে মানুষের ওপর হামলা আর জুলুম-নির্যাতন চালায়। ব্যবসায়ীদের দোকানে তালা মেরে ব্যবসার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিম ইলিশার শান্তিপ্রিয় মানুষ এ রকম তাণ্ডবলীলা অতীতে কখনো দেখেনি। একজন জহিরের কারণেই এখন পশ্চিম ইলিশার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তার হুমকিতে আমি ও আমাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভোলার প্রশাসনের কাছে আমি ও আমার পরিবারের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন কি না, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন বলেন, ভোলা পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহির তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আলমগীর হোসেন মানিক যে অভিযোগ করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহিন ও উদ্দেশ্যমূলক। আমার নির্বাচনকে বানচাল করার লক্ষ্যে প্রতিপক্ষের সাজানো কথাগুলো তিনি প্রেস করেছেন। এ ধরনের ঘটনা এই ইউনিয়নে ঘটেনি এবং আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইমতিয়াজুর রহমান/এনএ